জাফলং প্রতিনিধি : সিলেটের জাফলংয়ে উন্নয়ন কমিটি’র চাঁদা আদায়ের ঘটনা নিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন পর্যটকরা। এতোদিন ঘটনাটি আড়ালে থাকলেও ৫ মে বৃহস্পতিবার চাঁদা আদায়ের ঘটনা নিয়ে পর্যটকদের লাঠিপেটা করেন পর্যটন উন্নয়ন কমিটি কর্তৃক নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকরা। এ ঘটনার পর উঠে এসেছে নেপথ্যে উন্নয়ন কমিটির নামে ‘চাঁদাবাজি’। স্থানীয় কতিপয় নেতাকর্মী তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠা স্বেচ্ছাসেবক চক্র। চক্রের সদস্যরা লাখ লাখ পর্যটকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে ভাগবাটোয়ারা করে নেন।
এজন্য উপজেলা প্রশাসন ও পর্যটন উন্নয়ন কমিটি’কে দায়ী করছেন বিভিন্ন মহল। পরিচ্ছন্নতার নামে ১০ টাকা চাঁদা আদায়ের ঘটনা জানে না জেলা পুলিশও।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান চাঁদা আদায়ের সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন- এটা চাঁদা নয়, প্রবেশ ফি হিসেবে আদায় করা হচ্ছে, যে টাকা উন্নয়ন খাতে ব্যবহার হচ্ছে।
তবে প্রাকৃতিক পর্যটন এলাকায় প্রবেশ ফি বা চাঁদা আদায়ের যৌক্তিকতার প্রশ্নে তিনি বলেন- জেলা উন্নয়ন কমিটি নির্ধারণ করে দিয়েছে, উপজেলা প্রশাসন কেবল বাস্তবায়ন করেছে।
সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন বলেন- উপজেলা প্রশাসন এই ফি কিভাবে নির্ধারণ করেছে? এটা কিসের টাকা? কি হিসেবে তোলা হচ্ছে? এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গেও কোনো সমন্বয় করা হয়নি। এটা উপজেলা প্রশাসনই বলতে পারবে। তবে পর্যটক হযরানির ঘটনা এখন থেকে তদারকিতে নেওয়া হচ্ছে। আজ যা ঘটেছে, এটা কেবল জাফলংয়ের জন্য নয়, পুরো একটি অঞ্চলের জন্য বদনামের।
পর্যটন উন্নয়ন কমিটির সদস্য, স্থানীয় পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান লেবু পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক মন্তব্য করে বলেন- ঈদের আগে বৈঠকে কমিটি ১০ টাকা ফি নির্ধারণ করেছে। যদিও প্রাকৃতিক পর্যটন এলাকায় এই ফি নির্ধারণ ঠিক হয়নি।
পর্যটন উন্নয়ন করপোরেশনতো বরাদ্দ দিয়ে থাকে তাহলে উপজেলা প্রশাসন কেনো প্রবেশ ফির নামে চাঁদা নিচ্ছে এবং কার স্বার্থে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- স্বেচ্ছাসেবক ও পরিস্কার পরিচ্ছন্নের কাজে আমরা এই টাকা ব্যয় করে থাকি। তবে এ নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, এটা খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় জড়িতরা সর্বোচ্চ শাস্তি পাবে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লখ্য, পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে জাফলংয়ে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের লাঠিপেটা ও নারী পর্যটকদের শারিরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ৫ জনকে আটক করা হয়েছে।