দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ তিন থেকে চার মাসের মধ্যে শেষ করা যাবে বলে আশা করছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা। সেই হিসাবে আগামী জুন মাসের মধ্যে এই পথে রেল চলাচল শুরু হতে পারে। এই রেললাইন চালু হলে মোংলা বন্দর দিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর পণ্য পরিবহন সহজতর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে তিন বছর মেয়াদে এই প্রকল্প শুরু হয়েছিল। কয়েকবার নকশা পরিবর্তন হওয়ায় এর মেয়াদ ও প্রকল্প ব্যয় বেড়েছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ৭২১ কোটি টাকা; বর্তমানে ব্যয় দাঁড়াচ্ছে চার হাজার কোটি টাকার বেশি। প্রকল্প দপ্তরের তথ্য, সরেজমিন পরিদর্শন এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্পের প্রধান কাজ ছিল ৭৭৬.৬৭ একর ভূমি অধিগ্রহণ, খুলনা থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত ৬৪.৭৫ কিলোমিটার মেইন লাইন নির্মাণ, ২১.১১ কিলোমিটার লুপ লাইন, আটটি রেলওয়ে স্টেশন তৈরি; ৩১টি ছোট-বড় সেতু নির্মাণ, ১১২টি কালভার্ট, রূপসা নদীর ওপর ৭১৬.৮০ মিটার সেতু নির্মাণ, রূপসা সেতুর দুই প্রান্তে ভায়াডাক্ট (উড়ালপথ) নির্মাণ, ২০০ মিটার আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল এবং পানি সরবরাহ ব্যবস্থা নির্মাণ করা।
প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব কাজের মধ্যে রেললাইন নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৯০ শতাংশ। মূল রেললাইন ৬৫ কিলোমিটার; এ ছাড়া রয়েছে ২৪ কিলোমিটার লুবস অ্যান্ড ইয়ার্ড লাইন। আটটি স্টেশন ভবনের মধ্যে পাঁচটির কাজ প্রায় শেষ হলেও বাকি তিনটির কাজ গড়ে ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। রূপসা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটির কাজ শেষ হয়েছে। তবে এতে এখনো রেললাইন বসানো হয়নি। রেললাইনে ট্রেন চলাচলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে অটোমেটিক ইলেকট্রিক সিগনাল স্থাপন করা। বর্তমানে সেটির কাজ চলছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, শুরু থেকেই প্রকল্পটি নানা ধরনের বাধার মুখে পড়ে। এ কারণে সময় বেশি লেগেছে। প্রকল্পটির মেয়াদ চলতি ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই সময় সম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ছয় মাস অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, কয়েক দফা নকশা পরিবর্তন, নতুন নতুন বিষয় সংযুক্ত হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা যায়নি। তবে দ্বিতীয় সংশোধনী প্রকল্প ব্যয় ও সময়সীমা অনুযায়ী আগামী জুনের মধ্যেই খুলনা-মোংলা রেললাইনের কাজ শেষ হবে।
খুলনা-৫ (ফুলতলা-ডুমুরিয়া) আসনের সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র বলেন, ‘এই রেললাইনটি চালু হলে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে রেল যোগাযোগের মাধ্যমে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি খরচ সাশ্রয় হবে।’প্রসঙ্গত দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মোংলা দিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর পণ্য পরিবহন সহজতর করতে ভারতীয় ঋণের টাকায় এই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়।