দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : জনগণই তার শক্তি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি কখনোই কোনো বিদেশি চাপের কাছে মাথা নত করবেন না। আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সোমবার বিকেলে গণভবনে তাঁর সাম্প্রতিক কাতার সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এমন কোনো চাপ নেই যেটা শেখ হাসিনাকে দিতে পারে। এটা মাথায় রাখতে হবে। কারণ আমার শক্তি একমাত্র আমার জনগণ, আর উপরে আল্লাহ আছেন। আর আমার বাবার আশির্বাদের হাত আমার মাথায় আছে। কাজেই কে কি চাপ দিল, না দিল- এতে আমাদের কিছু আসে যায় না।’ নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি কোনো চাপ অনুভব করছেন কিনা বা আন্তর্জাতিক কোনো চাপ তাঁর অথবা সরকারের ওপর রয়েছে কিনা’- এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের একটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে শেখ হাসিনাকে চাপ দিতে পারে এমন কোনো চাপ নেই। কারণ আমার শক্তি একমাত্র আমার জনগণ।’
তিনি আরো বলেন, ‘জনগণের স্বার্থে যেটা করার আমরা সেটাই করব। জনগণের কল্যাণে যে কাজ করার সেটাই করব। এরকম বহু চাপ তো ছিলই। পদ্মা সেতুর আগে তো কম চাপ দেওয়া হয়নি। কোনো একটা দেশের রাষ্ট্রদূত এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী থেকে শুরু করে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে টেলিফোনের পর টেলিফোন এসেছে। হেনো তেনো কারণেও টেলিফোন। একজন ভদ্রলোক একটি ব্যাংকের এমডি, তাকে এমডি পদে রাখতে হবে। আর এই এমডি পদে কি মধু, তাতো আমি জানি না।’
‘আইনে নেই, তবু ৭০ বছর বয়স হয়ে গেলেও, এমডি পদে তাকে থাকতে হবে’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এতে একটাই হয় যে, এমডি পদে থাকলে বোধ হয় মানি লন্ডারিং করা যায়, এটাই সুবিধা। পয়সা বানানো যায়, পয়সা মারা যায়, গরিবের রক্ত চুষে খাওয়া যায়। তো সেই চাপও কিন্তু শেখ হাসিনা সহ্য করে চলে এসেছে এবং তারপরেও নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু করে দেখালাম সেই চাপে আমাদের কিছু আসে যায় না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে কতগুলো আইন আছে। সে আইন অনুযায়ী সব চলবে এবং সেটা চলে। আমাদের বিচার বিভাগ স্বাধীন। শ্রমিকদের অধিকার আমরা রক্ষা করি, ট্যাক্স বিভাগ আছে আলাদা। তারা সেটি আদায় করে। কেউ যদি আইন ভঙ্গ করে, শ্রমিকের অধিকার কেড়ে নেয়, শ্রম আদালত আছে। এই ক্ষেত্রে আমার তো কিছু করার নেই সরকার প্রধান হিসেবে। পদ্মা সেতু কিন্তু করে ফেলেছি, এটুকুই সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিলাম।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘এটা বিবৃতি না, এটা একটা বিজ্ঞাপন। যে ৪০ জনের নাম ব্যবহার করা হয়েছে একজন বিশেষ ব্যক্তির পক্ষে, এর উত্তর কী দেব, জানি না। আমার একটা প্রশ্ন আছে, যিনি এত নামিদামি নোবেল প্রাইজপ্রাপ্ত, তার জন্য এই ৪০ জনের নাম খয়রাত করে এনে বিজ্ঞাপন দিতে হবে কেন? তাও আবার বিদেশি পত্রিকায়।’
প্রায় দেড় ঘন্টাব্যাপী এই সংবাদ সম্মেলনে কাতার সফরের বিষয়বস্তু ছাড়াও আগামী নির্বাচন, সংলাপ, কূটনৈতিক সম্প্রদায়ের দৌঁড়ঝাপ, নানামুখী অপতৎরতা, গুজব রটানো, দেশকে অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে স্থিতিশীল গণতন্ত্রের প্রয়োজনীয়তাসহ সাংবাদিকদের নানামুখি প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এবং বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইসানুল করিম সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন।