দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক: জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে আহতদের যাচাই-বাছাই করে দ্রুত ইউনিক আইডি কার্ড দেওয়া হবে। সরকারি হাসপাতালে আইডি কার্ডধারীরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আজীবন চিকিৎসা (ফাস্ট ট্র্যাক সার্ভিস) পাবেন। সরকারি হাসপাতালে যেসব চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাচ্ছে না বা যাবে না, সেগুলোর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট চুক্তিভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বিনামূল্যে সেবা দেওয়া হবে। সেগুলোর খরচ পরে সরকার পরিশোধ করবে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) জুলাই -আগস্ট বিপ্লবে শহীদ ও আহত ছাত্র জনতার চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও কর্মসস্থান বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে বৈষমবিরোধী আন্দোলনে যারা আহত হয়েছেন তাদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ফাস্ট ট্র্যাক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। দেশের সমগ্র হাসপাতালে এ নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। সরকারি সমস্ত হাসপাতালে আহতরা সব ধরনের চিকিৎসা আজীবন বিনামূল্যে পাবেন। এছাড়া বিএসএমএমইউ হাসপাতালের কেবিন ব্লক মাল্টি ডিসিপ্লিনারি হাসপাতাল হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আহতদের যারা ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন, তাদের স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে প্রয়োজন অনুযায়ী বিএসএসএমইউর কেবিন ব্লকে যোগাযোগের অনুরোধ করা হচ্ছে। বিএসএমএমইউর স্পেশালাইজড হাসপাতালের নিচের তলাটি সম্পূর্ণ ডেডিকেটেড করা হয়েছে আহতদের আউট পেশেন্ট সার্ভিসের জন্য।
আহতদের বিদেশে পাঠানো নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, এটা নিয়ে মানুষের মধ্যে কনফিউশন আছে, বিভ্রান্তি আছে। এটা আমরা স্পষ্ট করতে চাই, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আমরা স্পষ্ট করতে চাই যার যার প্রয়োজন ও উন্নত চিকিৎসা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেন, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে আহতদের শ্রেণিকরণের ওপর ভিত্তি করে প্রাথমিকভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদানের সর্বোচ্চসীমা ১ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করা হয়েছে। আমাদের নজরে এসেছে এরই মধ্যে অনেকেই চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ করে ফেলেছেন। সেই চিকিৎসার টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য একটি উদ্যোগ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে নেওয়া হয়েছে। অবশ্যই এ টাকাটা তিন লাখ টাকার সঙ্গে জড়িত নয়। এটি সম্পূর্ণ আলাদা। যার যত টাকা খরচ হয়েছে ডকুমেন্টসসহ আমাদের সেলে জমা দিলে আমরা যথাযথ ভেরিফিকেশন করে আহতদের টাকা ফেরত দেব।
গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের দলনেতা খন্দকার জহিরুল ইসলাম (অতিরিক্ত সচিব) বলেন, আহতদের পুনর্বাসনের একটা সুনির্দিষ্ট নীতিমালা সরকার থেকে করা হবে। জুলাইয়ের আন্দোলনে অনেকে আহত হয়েছেন, যারা শারীরিকভাবে আহত হয়ে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যাতে কর্মজীবনে ফিরে আসার পথ ব্যাহত হতে পারে। এজন্য সরকার কিছু অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবে যাতে আহতদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়। যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবার এবং যারা আহত হয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা সরকারের আছে।