সোহেল আহমদ চৌধুরী, বার্মিংহাম প্রতিনিধি : ১৪ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস । ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানিদের দোসর আল-বদর , আল- শামসের কতিপয় দেশী দালালদের হাতে অত্যন্ত নির্দয়ভাবে প্রাণ হারান জাতির কৃতি সন্তানেরা। আজ হত্যাকান্ডের শিকার জাতির এই কৃতি সন্তানদের বার্মিংহামের সর্বস্তরের জনগণ অত্যন্ত শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করেছে মুক্তিযোদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহনের মাধ্যমে ।
মহান মুক্তিযোদ্ধের শেষ লগ্নে যখন জাতি আর মাত্র দুইদিনের দুরত্বে চুড়ান্ত বিজয়ের দিন ১৬ই ডিসেম্বরের ঠিক দুইদিন আগে ১৪ই ডিসেম্বর রাতে,পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও ওদের বাঙালি দোসর আল-বদর, আল- শামসের দালালদের সহযোগিতায় বাঙালি জাতিকে মেধা শূন্য করার ঘৃন্য চক্রান্ত করে। হানাদার বাহিনী ও তাঁদের দেশীও দালালেরা রাতের অন্ধকারে বাঙালি জাতির শ্রেষ্ট সন্তান শিক্ষিক, বুদ্ধিজীবী ,চিকিৎসক , বিজ্ঞানী , সাংবাদিক , সাহিত্যিক , আইনজীবী , প্রকৌশলী , শিল্পী , সরকারি কর্মচারি , ক্রীড়াবিদ সহ মেধাবি নানা পেশাজীবী মানুষদের ঘর থেকে অস্ত্রের মুখে তোলে নিয়ে কাপুরুষের মত রাতের অন্ধকারে চোখ হাত বেঁধে হত্যা করে নারী পুরুষ সবাইকে ১৬ই ডিসেম্বর চুড়ান্ত বিজয়ের পরের দিন রায়ের বাজার ও মিরপুর বধ্যভূমিতে সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হাত পা বাঁধা ক্ষতবিক্ষত লাশ অর্ধ গলিত অবস্হায় পাওয়া যায়। ১৪ই ডিসেম্বর সাড়া জাতির জন্য খুব দুঃখের দিন, খুব দুর্ভাগ্যের দিন, চুড়ান্ত বিজয়ের উষালগ্নে জাতি হারালো তাঁর শ্রেষ্ট সন্তানদের। সত্যিকারেই ১৪ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাঁদের এ দেশীয় দোসরা চেয়ে ছিল এ জাতিকে মেধা শূন্য করে দিতে । ১৪ই ডিসেম্বর সাড়া দেশে ওরা ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়।কিন্তু আমাদের বীর সন্তান মুক্তিবাহিনীর তীব্র প্রতিরোধের মুখে বাধ্য হয়ে হানাদার বাহিনী ও তাঁর দোসররা ১৬ই ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে। আর এই আত্মসমর্পণের মাধ্যমে বাঙালিদের চুড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয় ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর এক সাগর রক্তের বিনিময়ে। আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি। নাম না জানা লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আজকের প্রিয় বাংলাদেশ ।
১৪ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে কমিউনিটি লিডার বার্মিংহাম শহীদ মিনারের প্রধান উদ্যেক্তা কমরেড মসুদ আহমদ ও সিনিয়ার কমিউনিটি নেতা ব্যবসায়ী বশির মিয়া কাদিরের আহ্বানে স্মলহীত পার্কের প্রধান ফটকের সামনে বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে সকল শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে হাতে মোমবাতি প্রজ্বলনের করে নিরবতা পালনের মাধ্যমে শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনেসহ রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়।
প্রজ্বলিত মোমবাতি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বার্মিংহাম বাঙালি কমিউনিটির অতি পরিচিত কমিউনিটির বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ ডাঃ এ খালিক, বশির মিয়া কাদির, কমরেড মসুদ আহমদ, নিজাম উদ্দিন, এনামুল হক নেপা, মোহাম্মদ সয়ফুল আলম, এরশাদ আলী, দিপু শেখ , জয়নাল আহমদ, নুরুল ইসলাম কিসলু প্রমুখ ।