বদরুল আলম, লন্ডন থেকে : ১৫ বছর বয়সে যুক্তরাজ্য ছেড়ে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএসে যোগ দেওয়া শামীমা বেগম তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা আপিলে হেরে গেছেন। বুধবার যুক্তরাজ্যের বিশেষ অভিবাসন আপিল কমিশন (সিয়াক) শামীমার আবেদন নাকচ করে দিয়ে নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন।
এর আগে, গত নভেম্বরে পাঁচ দিনব্যাপী এ আপিলের শুনানি হয়। বুধবার এ সিদ্ধান্ত দেন বিচারক রবার্ট জে। রায়ে শামীমা ব্রিটেনে ফিরতে পারবেন কিনা তা নির্ধারণ করা হয়নি, তবে তার নাগরিকত্ব বাতিল বৈধ ছিল। কমিশন জানায়, শামীমার নাগরিকত্ব বাতিল আইনিভাবে সঠিক ছিল।
বর্তমানে ২৩ বছর বয়সি শামীমা উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন। ২০১৫ সালে দুই স্কুল বন্ধুর সঙ্গে আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় যান। ২০১৯ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ শামীমার নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন। এ সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন শামীমা।
লন্ডনের স্পেশাল ইমিগ্রেশনস আপিল কোর্টে শামীমা বেগমের বিচার শুরু হয়। আদালতে শামীমার আইনজীবীরা বলেন, শামীমা মানব পাচারের শিকার হয়েছিলেন। তাকে অনলাইনে প্ররোচিত করে ব্রিটেনের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে তাকে সিরিয়ায় পাচার করা হয়। অপরদিকে ব্রিটিশ সরকারের পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তি দেন, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ মূলত জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে শামীমার নাগরিকত্ব বাতিল করেছিলেন।
সে সময় ব্রিটিশ সরকার দাবি করে, পিতা-মাতা সূত্রে শামীমার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব রয়েছে। তবে বাংলাদেশ সরকার ব্রিটেনের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করে। শামীমার আইনজীবী ড্যান স্কুয়ার্স আদালতকে বলেন, শামীমা যদি বাংলাদেশে ফিরে যায় তাহলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হতে পারে। ব্রিটিশ সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে তিনি রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েছেন।
এখন সোস্যাল মিডিয়ায় অনেকে বাংলাদেশ সরকারকে উদ্দেশ্য করে জানতে চেয়েছেন, শামীমা বেগমের বাবা ও মা যেহেতু বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন তাহলে শামীমা কি বাংলাদেশে আসতে পারবেন। যদিও এ নিয়ে এখনও সরকারের পক্ষ থেকে কোন কিছু বলা হয়নি।