দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : প্রথমার্ধ ছিল ম্যাড়ম্যাড়ে। একদল আক্রমণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আরেক দল শুধু রুখেই যাচ্ছে। জয় হলো এই শুরুতে আক্রমণ করে যাওয়া দলেরই। দ্বিতীয়ার্ধে যখন উরুগুয়ের বোধোদয় হয়েছে তখন আমও গেছে ছালাও গেছে অবস্থা। লুসাইলে সোমবার (২৯ নভেম্বর) রাতে উরুগুয়েকে ২-০ গোলে হারিয়ে কাতার বিশ্বকাপের শেষ ষোলো নিশ্চিত করে পর্তুগাল। এইচ গ্রুপ থেকে নকআউট পর্বে যাওয়া পর্তুগীজদের হয়ে দুটো গোলই করেছেন ব্রুনো ফার্নান্দেজ।
দুই গোল দিয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছেন কাতারে দারুণ খেলা ব্রুনো। ১৯৬৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আর কেউ পারেনি ব্রুনোর মতো। যে কোনো বিশ্বকাপে জোড়া গোলের সঙ্গে জোড়া অ্যাসিস্ট ৬৬ বিশ্বকাপ থেকে পর্তুগালের জার্সি গায়ে কেউ করতে পারেনি। অথচ শুরুতে তার নামই ছিল না। ম্যাচের ৫৪ মিনিট। ব্রুনোর ক্রস থেকে রোনালদোর স্পর্শে এগিয়ে যায় পর্তুগাল। রোনালদো উৎসবে মাতে লুসাইল। নামের সঙ্গে যোগ হয় গোল। কিন্তু ১৪ মিনিট পর বদলে যায় দৃশ্যপট। মাঠের ঘোষক জানান ব্রুনোর ক্রস থেকেই গোল হয়েছে। ৬ গজের মধ্যে দারুণ ক্রসে হওয়া ব্রুনোর গোলে লাভটা যে পর্তুগালেরই। গোল বিভ্রাট হোক আর যাই হোক পর্তুগীজরা এগিয়ে গেছে এটাই বড় কথা। ম্যাচের প্রথম অন টার্গেট শটেই পর্তুগালের গোল।
প্রথম গোলটি হয়নি, মাঠে থাকলে নিশ্চিত দ্বিতীয় গোলটি রোনালদোর নামেই হতো। যোগ করা সময়ের ৩ মিনিটে ডি বক্সে ব্রুনোর শটই ক্লিয়ার করতে গিয়ে নীচে পড়ে বল হাতে লাগিয়ে ফেলেন গিমিনেজ। ভারের সহায়তায় রেফারি পেনাল্টি দেন। উরুগুয়ে সেটি মানতে চায়নি। তবে উপায় ছিল না। বুদ্ধিদীপ্ত এক শটে উরুগুয়ের গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে জড়িয়ে দেন জালে। শেষ পর্যন্ত জয় এই দুই গোলেই।
শুরুর দিকে বেশি রক্ষণাত্মক ছিল উরুগুয়ে। ধীরে ধীরে আক্রমণে উঠে আসছিল বারবার। তবে লাভ হয়নি। একটি সহজ সুযোগ মিস করেছে তারা। ৩২ মিনিটে অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন রোনালদোরা। বেন্টাকুর বল পেয়েই ডি বক্সে ড্রিবলিং করে ঢুকে যান। বাঁধা হয়ে দাঁড়ান পর্তুগীজ গোলরক্ষক। এগিয়ে এসে শট রুখে দিয়ে বল নিয়ে নেন নিজের নিয়ন্ত্রণে। অন্যদিকে বারবার আক্রমণের চেষ্টা করে গেলেও উরুগুয়ের রক্ষণভেদ করতে পারেনি পর্তুগীজরা। ৮টি আক্রমণ করে, সবগুলোই ছিল লক্ষ্যহীন। প্রথমার্ধে ৭০শতাংশ বল ছিল পর্তুগালের পায়ে। উরুগুয়ে যেখানে ১০টি ফাউল করে সেখানে পর্তুগাল করে মাত্র ২টি।
দ্বিতীয়ার্ধ ছিল তার বিপরীত। পুরো ম্যাচে পর্তুগালের ১৮ শটের বিপরীতে উরুগুয়ে ১৪টি নেয়। প্রত্যেকেরই তিনটি করে অন টার্গেট শট। ২ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার আগে এই গ্রুপ থেকে নকআউটে পর্তুগাল। ঘানার বিপক্ষে জিতলেই যেতে পারবে উরুগুয়ে। আর যদি দক্ষিণ কোরিয়া পর্তুগালের বিপক্ষে জিতে যায় আর উরুগুয়ে-ঘানা ম্যাচ ড্র হয় তাহলে তিন দলই দৌড়ে থাকবে শেষ ষোলোতে যাওয়ার।