দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : কাতার বিশ্বকাপ দেখতে এসে দর্শকদের ইসলাম সম্পর্কে সঠিকভাবে জ্ঞান লাভের সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ সাংবাদিক রবার্ট কার্টার। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ইসলামিক টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাতকারে তিনি একথা বলেন। ব্রিটিশ সাংবাদিকের এমন বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। তার এ বক্তব্যকে কাতারসহ আরব ও মুসলিম বিশ্ব সম্পর্কে ভিন্ন চিত্রায়ণ হিসেবে দেখছেন নেটিজেনরা।
কাতারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ইসলাম পরিচিতিমূলক বিভিন্ন আয়োজনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপের ইভেন্টগুলো ইসলামের বাস্তবতা সম্পর্কে জানার সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করেছে এবং পশ্চিমাদের ইসলামোফোবিয়া তৈরির পেছনে কারা রয়েছেন তা প্রকাশ করেছে। তা ছাড়া নামাজের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বকাপের ইভেন্টগুলো স্থগিত রাখা হচ্ছে, যদি অন্য রকম অনভূতি তৈরি করছে দর্শকদের মধ্যে। ’
ব্রিটিশ সাংবাদিক আরো জানান, ‘পশ্চিমা বিশ্বে ইসলাম ও মুসলিম সমাজের নানা ইস্যু নিয়ে যুদ্ধ ও সংঘাত এখনো অব্যাহত রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পুরো ইউরোপে ইসলামোফোবিয়ার বিস্তার এখনও একটি বড় সমস্যা। অবশ্য বিভিন্ন ইসলামী সংস্থার সহযোগিতায় মিথ্যা অভিযোগ ও তথ্যের খণ্ডন করা হচ্ছে। ’তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্বকাপ আয়োজনকে ঘিরে কাতারের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে ইউরোপের কয়েকটি দেশ। ইসলামফোবিয়ার পদ্ধতিগত প্রচারণার অংশ হিসেবে তা করা হয়। এর মাধ্যমে মুসলিমদের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ’
ইউরোপীয় দেশগুলো কাতারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুললেও ইসরায়েল নৃশংসতা নিয়ে তাদের নীরবতায় বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি। এমনকি পশ্চিমাদের নেতিবাচক প্রচারণা বিশ্বকাপের দর্শকদের মধ্যে বিরক্তিভাব তৈরি করেছে বলে মনে করেন তিনি।
গত ২০ নভেম্বর ফিফা বিশ্বকাপের উদ্বোধনী পর্বে পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত পাঠ করা হয়। তাতে মার্কিন অভিনেতা মর্গান ফ্রিম্যান ও কাতারি তরুণ গানিম আল-মিফতাহের সংলাপে দেওয়া হয় সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বার্তা। দর্শকদের কাছে ইসলামের পরিচিতি ও আরব-মুসলিম সংস্কৃতি তুলে ধরতে নানা উদ্যোগ নেয় কাতারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। আরব ও ইসলামী সংস্কৃতি প্রচারের অংশ হিসেবে বিতরণ করা হচ্ছে বিভিন্ন বইপত্র ও ঐতিহ্যবাহী কাহওয়া।
তা ছাড়া ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং ইসলাম’ নামে ছয় ভাষায় একটি ই-বুক এবং আরবি ভাষা শিখতে ‘দ্য কুইক স্টার্ট গাইড টু স্পোকেন অ্যারাবিক’ নামে ইংরেজি ও ফ্রেঞ্চ ভাষায় আরেকটি ই-বুক প্রকাশিত হয়েছে। বিভিন্ন হোটেল, স্টেশন ও দর্শনীয় স্থানগুলোতে রয়েছে এসব ই-বুকের কিউআর কোড। তা ছাড়া দোহার বিভিন্ন স্থানে সাঁটানো হয়েছে আরবি ও ইংরেজিতে মহানবী (সা.)-এর হাদিসসংবলিত দেয়ালচিত্র।