দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : মেক্সিকোয় একটি গিরিখাত থেকে মানুষের ৪৫টি দেহাবশেষ উদ্ধার করেছে দেশটির কতৃপক্ষ। মেক্সিকোর পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর গুয়াদালাজারার বাইরে এই দুর্গম গিরিখাতটির অবস্থান। সেখানে ব্যাগের ভেতর ভরা ছিল মানুষের দেহাবশেষগুলো। দেশটির কর্মকর্তারা জানান, সাতজন তরুণ কল সেন্টার কর্মীর খোঁজ করছিলেন। যারা গত সপ্তাহে নিখোঁজ হন। তাদের খোঁজে গিয়ে এইসব মৃতদেহর সন্ধান পান। দেহাবশেষগুলোর মধ্যে কতজন পুরুষ বা নারী রয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। গিরিখাতটি দুর্গম ও অন্ধাকার হওয়ার কারণে অনুসন্ধান কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মেক্সিকোর পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ জলিসকোর রাষ্ট্রীয় প্রসিকিউটরের কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, নিখোঁজ সাত জনের সন্ধানের বিষয়ে একটি তথ্য পাওয়ার পর মেক্সিকান কর্মকর্তারা মিরাডোর দেল বস্ক গিরিখাতে অনুসন্ধান শুরু করে এবং একপর্যায়ে সেখানে তারা মানবদেহের অঙ্গসহ এসব ব্যাগ খুঁজে পায়। অগ্নিনির্বাপক ও সিভিল ডিফেন্স পুলিশ এবং একটি হেলিকপ্টার দেহাবশেষগুলো উদ্ধারের জন্য কাজ করছে। প্রথম ব্যাগটি গত মঙ্গলবার পাওয়া গিয়েছিল। গিরিখাতটি দুর্গম ও সেখানে সূর্যালোকের অভাবের কারণে বুধবার থেকে তদন্ত পুনরায় শুরু হয়েছে।
সব দেহাবশেষ না পাওয়া পর্যন্ত অনুসন্ধান চলবে বলে প্রসিকিউটর অফিস জানিয়েছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা মৃতদেহের সংখ্যা, তাদের পরিচয় এবং তাদের মৃত্যুর কারণ বের করার জন্য তদন্ত চালিয়ে যাবে। এ ছাড়া নিখোঁজ ওই ৭ তরুণ কল সেন্টার কর্মীর খোঁজও চালিয়ে যাবে।
সরকারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী মেক্সিকোয় ১ লাখের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। নানা ধরনের অপরাধের শিকার হয়ে থাকে দেশটির মানুষ কারণ, অপরাধীদের খুব কমই শাস্তি দেওয়া হয়।
মেক্সিকোর সরকারী তথ্য থেকে জানা যায়, ২০০৭ সাল থেকে অনেক নিখোঁজ, যখন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ফেলিপ ক্যালডেরন মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছিলেন। নিখোঁজদের তিন-চতুর্থাংশ পুরুষ এবং এক পঞ্চমাংশের বয়স ছিল ১৮ বছরের কম। নিখোঁজদের স্বজনরা বলছেন, সরকার তাদের খুঁজে বের করার জন্য যথেষ্ট জোর দিচ্ছেন না এবং তাদের প্রিয়জনদের নিখোঁজের ব্যাপারে তারা উদাসীন। জাতিসংঘ এই ঘটনাকে ‘বিশাল বড় মানবিক ট্র্যাজেডি’ বলে অভিহিত করেছে। মেক্সিকোর এই পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ জলিসকো হল সহিংস মাদক যুদ্ধের কেন্দ্রস্থল।