দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : রাশিয়ার পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট পুতিন তার ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে গিয়ে তীব্র ভাষায় পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা করেছেন। এই সংঘাতের জন্য তিনি পশ্চিমা দেশগুলোকে দায়ী করে বলেন, ইউক্রেনকে তারা ‘রুশ-বিরোধী’ দেশে পরিণত করতে চাইছে। রাশিয়ার অস্তিত্ব সংকটের মুখে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
এ ছাড়াও এই ভাষণে প্রেসিডেন্ট পুতিন ঘোষণা দেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বড় অস্ত্র সীমিতকরণ চুক্তিতে অংশগ্রহণ স্থগিত রাখছেন। যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যে ‘নিউ স্টার্ট’ নামের এই চুক্তিটিই একমাত্র পরমাণু অস্ত্র সীমিতকরণ চুক্তি, যা এখন বহাল আছে। ২০২১ সালে এটির মেয়াদ পাঁচ বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু চুক্তিটি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি নতুন করে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা চালায়, রাশিয়াও একই কাজ করবে। পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে শুধু নিউ স্টার্ট চুক্তিই কার্যকর ছিল। আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ ২০১০ সালে এই চুক্তিতে সই করেছিলেন।
চুক্তিতে আমেরিকা ও রাশিয়া মোট কী পরিমাণ পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করতে পারবে, তার সংখ্যা নির্দিষ্ট করা হয়েছিল। ২০২১ সালে চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছরের জন্য বাড়িয়েছিল দুই পরাশক্তি। আগামী ২০২৬ সাল পর্যন্ত এই চুক্তির মেয়াদ ছিল। এই চুক্তির আওতায় এক দেশের কর্মকর্তারা অন্য দেশের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার পরিদর্শনের সুযোগ পেতেন। তবে ইউক্রেন নিয়ে উত্তেজনার কারণে ওই পরিদর্শন ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
বিশ্বের মোট পারমাণবিক অস্ত্রের ৯০ শতাংশ রয়েছে রাশিয়া ও আমেরিকার হাতে। নিউ স্টার্ট চুক্তিতে উভয় দেশের সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫৫০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড মোতায়েনের সুযোগ ছিল। সেই সঙ্গে ৭০০টি মিসাইল ও ভারী যুদ্ধবিমান মোতায়েনের সীমাবদ্ধতা ছিল ওই চুক্তিতে। কেউ চুক্তির সীমা লঙ্ঘন করছে কিনা তা নিশ্চিত করতে উভয়পক্ষ প্রত্যেক বছর কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রাগার ১৮ বার পর্যন্ত পরিদর্শন করতে পারতেন। তবে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ২০২০ সালের মার্চে এই পরিদর্শন স্থগিত হয়ে যায়।