দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : গভীর রাতে মরক্কোর এটলাস পর্বতমালায় একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে কমপক্ষে ২৯৬ জন নিহত হয়েছে। রিকটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৮। ভূমিকম্পে বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে মৃতের সংখ্যা ২৯৬ এবং আহত ১৫৩ জন। স্থানীয় এক কর্মকর্তা নিয়েছেন, বেশিরভাগ মৃত্যুই পাহাড়ি এলাকায় হয়েছে। যেখানে পৌঁছানো বেশ কঠিন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো জানায়, ভূমিকম্পটি আল হাউজ, ওয়ারজাজেট, মারাকেচ, আজিলাল, চিচাউয়া এবং তারউদান্ত প্রদেশে আঘাত করেছে।
মরক্কোর জিওফিজিক্যাল সেন্টার জানিয়েছে, ‘হাই এটলাস’-এর ইঘিল এলাকায় ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৮। ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল মারাকেশের ৭১ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং ১৮.৫ (১১.৫ মাইল) কিলোমিটার গভীরে।
এর ১৯ মিনিট পরেই একটি ৪.৯ মাত্রার আফটারশকও হয়েছিল। ভূমিকম্পে ভবনগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। মারাকেশের পুরানো শহরের কিছু ভবন ধসে পড়েছে বলে জানিয়েছেন এক বাসিন্দা। এটিকে ‘হিংসাত্মক কম্পন’ বলে বর্ণনা দিয়েছেন স্থানীয়রা। ১০ মিনিট ধরে বিদ্যুৎ ও ফোন লাইন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন তারা।
প্রধান শহরগুলোর বাসিন্দারা ভয়ে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে পড়ে। সংবাদ সংস্থা এফপি জানিয়েছে, একটি পরিবার ধসে পড়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়েছে। শহরের বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দেশটির কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রের নিকটতম বড় শহর মারাকেশের বাসিন্দারা বলেছেন, ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট এবং পুরানো শহরের কিছু ভবন ধসে পড়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে প্যান-আরব আল-আরাবিয়া নিউজ চ্যানেল জানিয়েছে, ভূমিকম্পে একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হয়েছে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রের কাছের পাহাড়ি গ্রাম আস্নির বাসিন্দা মনতাসির ইত্রি জানান, সেখানকার বেশিরভাগ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে এবং গ্রামের মানুষ তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’ দেশটির আরো পশ্চিমে তারউদান্তের কাছে বসবাস করেন শিক্ষক হামিদ আফকার। তিনি বলেছেন, ভয়ে তারা বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছেন এবং ভূমিকম্পের পরে একটি আফটারশক হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীটি প্রায় ২০ সেকেন্ডের জন্য কেঁপে উঠেছিল। আমি দ্বিতীয় তলা থেকে নিচে নেমে আসার সঙ্গে সঙ্গে দেখলাম দরজা নিজেই খুলে গেল এবং বন্ধ হয়ে গেল।’