দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : ইরানের চাবাহার বন্দর নিয়ে চুক্তি করেছে ভারত। তার পরপরই নাম না উল্লেখ করে ভারতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার হুঁশিয়ারি দিলো যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার (১৪ মে) ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনো দেশ যদি ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখে, তাহলে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো হতে পারে।
সোমবার ইরানের সঙ্গে চাবাহার বন্দর নিয়ে ১০ বছরের চুক্তি করে ভারত। মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল। সেখানে ভারত-ইরান চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বেদান্ত সাফ জানিয়ে দেন, বিষয়টি আমরা আমরা জানি।
‘আমরা চাই, ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইরানের সঙ্গে তাদের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে আমাদের বিস্তারিত জানাক। ইরানের সঙ্গে তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, চাবাহার বন্দর সংক্রান্ত চুক্তি- সবকিছু নিয়েই ভারতের কথা বলা উচিত। বেদান্ত আরও বলেন, ইরানের ওপর দীর্ঘদিন ধরে নিষেধাজ্ঞা বজায় রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাছাড়া কোনো দেশ যদি ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখে, তাহলে ওইসব দেশের ওপরেও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পড়তে পারে।
নাম উল্লেখ না করে ভারতকে সতর্ক করে বেদান্ত বলেন, যারাই ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি করবে, তাদের মনে রাখা উচিত যে তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা পড়ার পথ খুলে দিচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যে বাণিজ্য পরিবহনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। তারই অংশ হলো ইরানের সঙ্গে চাবাহার বন্দর চুক্তি। ভারতের নৌপরিবহন ও বন্দরমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল এই চুক্তির জন্য ইরানে গিয়েছিলেন। সোমবার ভারতের নৌ মন্ত্রণালয় জানায়, ইন্ডিয়ান পোর্টস গ্লোবাল লিমিটেড (আইপিজিএল) ও ইরানের পোর্ট অ্যান্ড মেরিটাইম অর্গানাইজেশন চাবাহার বন্দরের উন্নয়নের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি সই করেছে।
ইরানের সড়ক ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী মেহরদাদ বজরপাশ জানিয়েছেন, চুক্তির অধীনে ইরানি ওই বন্দরের উন্নয়নে আইপিজিএল অতিরিক্ত ২৫ কোটি ডলার অর্থায়নের পাশাপাশি ১২ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, চুক্তিটি ইরানি বন্দরটিতে বড় বিনিয়োগের পথ খুলে দেবে।
২০১৮ সালের শেষদিকে চাবাহার বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব নেয় ভারত। বন্দরটি পাকিস্তানের স্থলপথ ব্যবহার ছাড়াই ভারতে আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ায় ভারতীয় পণ্য পরিবহনের জন্য একটি নতুন পথ খুলে দেয়। জানা গেছে, এ পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আফগানিস্তানে ২৫ লাখ টন গম ও ২ হাজার টন ডাল পাঠানো হয়েছে।