দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : অনিশ্চয়তা ও টানাপেড়েনের অবসান ঘটিয়ে শ্রীলঙ্কায় প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে চীনের জাহাজ ইউয়ান উয়াং-৫। নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের আপত্তি তোলার পরও গতকাল শনিবার এ অনুমতি দেয় কলম্বো সরকার। ভারতের আশঙ্কা, জাহাজটি তাদের সামরিক খাতের ওপর নজরদারি করতে পারে। দেশটি এ কারণে শ্রীলঙ্কাকে ইউয়ান উয়াং-৫ জাহাজটি ভেড়ার অনুমতি না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল।
আর্থিক সঙ্কটে ভুগতে থাকা শ্রীলঙ্কাকে এ বছর সবচেয়ে বেশি সহায়তা প্রদান করেছে ভারত। দেশটির দাবি, চীন শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরকে সামরিক ঘাটি হিসেবে ব্যবহার করছে। এশিয়া এবং ইউরোপের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র রুটে এই বন্দরের অবস্থান।
শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইউয়ান ওয়াং ৫ জাহাজটির গত ১১ আগস্ট শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ উপকূলে হাম্বানটোটার বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। তবে জাহাজটি এখন মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) পৌঁছাবে। শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকটের কারণে কয়েক মাস ধরে চলা বিক্ষোভের পর সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার একদিন আগে ১২ জুলাই জাহাজটিকে বন্দরে আসার অনুমতি দিয়েছিলেন।
শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, মন্ত্রণালয় কলম্বোয় চীন দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং হাম্বানটোটায় ইউয়ান ওয়াং-৫ জাহাজের নোঙর পেছানোর কথা বলেছে। তারা শ্রীলঙ্কা ও চীনের মধ্যে স্থায়ী বন্ধুত্ব এবং চমৎকার সম্পর্ককে পুনঃনিশ্চিত করতে চায়, যা একটি দৃঢ় ভিত্তির ওপর অধিষ্ঠিত। সম্প্রতি দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে তা পুনর্ব্যক্ত হয়েছে।
হাম্বানটোটায় চীনা জাহাজটির নোঙরের অনুমতি নিয়ে ভারত নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলছে। তাদের ধারণা, যেটিকে গবেষণা জাহাজ বলা হচ্ছে, সেটি গুপ্তচরবৃত্তির কাজে ব্যবহৃত হতে পারে এবং এটি সাগরতলের ম্যাপিং করতে পারে।
ইউয়ান ওয়াং-৫ একটি গবেষণা ও জরিপ জাহাজ হিসেবে পরিচিত। এটি ২০০৭ সালে নির্মিত হয়। এর ধারণক্ষমতা ১১ হাজার টন। শ্রীলঙ্কায় জাহাজটির আসা নিয়ে নিরাপত্তা শঙ্কায় রয়েছে ভারত, কেননা এটি ভারত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিমাংশে স্যাটেলাইট গবেষণা চালাতে পারে। কলম্বো থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরতে হাম্বানটোটা বন্দরের অবস্থান। উচ্চ সুদে চীনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে এটি নির্মাণ করা হয়। ৯৯ বছরের জন্য চীনের কাছে বন্দরটি লিজ দিয়ে রেখেছে শ্রীলঙ্কা।