দেশ বিদেশ অনলাইন : ইউক্রেনে আটকা কোটি কোটি টন খাদ্যশস্য বিশ্ববাজারে রপ্তানি করতে সম্প্রতি চুক্তি করেছে ইউক্রেন এবং রাশিয়। তবে এ চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। চুক্তির পর ইউক্রেনের বন্দর নগরীতে রাশিয়ার হামলাএই সন্দেহ আরও জোরালো হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববাজারে আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে গমের দাম।
শস্য রপ্তানির জন্য কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী ইউক্রেনের তিনটি বন্দর পুনরায় চালু করার লক্ষ্যে গত শুক্রবার রাশিয়া, ইউক্রেন, জাতিসংঘ এবং তুরস্কের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। চুক্তিটি ১২০ দিনের জন্য কার্যকর থাকবে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে ইউক্রেন থেকে মাসে ৫০ লাখ টন খাদ্যশস্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর গমের ফিউচার্স বৈশ্বিক সূচকে গমের দাম বেড়েছে প্রায় ৪ শতাংশ। যদিও শুক্রবার ইস্তাম্বুলে চুক্তি স্বাক্ষরের দিন বিশ্ববাজারে গমের দাম কমেছিল প্রায় ৬ শতাংশ।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই ইউক্রেনের সামুদ্রিক বন্দরগুলো বন্ধ রয়েছে। তারপরও রেল এবং সড়কপথে প্রতিবেশী রোমানিয়া এবং পোল্যান্ডের মতো দেশে কিছু কিছু খাদ্যশস্যের ইউক্রেনীয় চালান পৌঁছেছে। যুদ্ধের কারণে এখনও ইউক্রেনে কোটি কোটি টন খাদ্যশস্য আটকা আছে। দেশটির কিছু অঞ্চলে মজুতের জায়গার অভাবে খাদ্যশস্যে পচনও ধরেছে।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শস্য রপ্তানিকারক ইউক্রেন থেকে চালান কমে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। জাতিসংঘের একাধিক সংস্থা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এ অবস্থা চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যে বিশ্বে কোটি কোটি মানুষ অনাহারে ভুগতে পারেন। শুধু তাই নয়, বিশ্বজুড়ে অভিবাসীদের নজিরবিহীন ঢলও শুরু হতে পারে।
ইউরোপের আরেকজন খাদ্যশস্য রপ্তানিকারক বলেছেন, সমুদ্র বন্দরে রাশিয়ার পেতে রাখা মাইন পরিষ্কার করতে কত সময় লাগবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। পাশাপাশি জাহাজের মালিকরা যদি মনে করেন যে, তাদের জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানতে পারে, তাহলেও তারা ইউক্রেনে যাত্রা করবে না।
ইউক্রেন নতুন চুক্তির আওতায় রোববার কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী বন্দরগুলো থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি পুনরায় শুরু করার জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে দেশটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ওডেসাতে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সরবরাহ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সেখানে আরও হামলার আশঙ্কা করছে ইউক্রেন।