দেশ বিদেশ ডেস্ক : চীনের কড়া সতর্ক বার্তা উপেক্ষা করে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফর করছেন। গত কয়েক দিনের তীব্র উত্তেজনার মাঝে মঙ্গলবার রাতের দিকে তাইওয়ানে পৌঁছানোর কথা রয়েছে তার। ন্যান্সির এই সফর ঘিরে দক্ষিণ চীন সাগরে তাইওয়ান লাগোয়া সীমান্ত এলাকায় ব্যাপক সামরিক শক্তি মোতায়েন করেছে চীন। চীনের সঙ্গে তীব্র উত্তেজনার মাঝে তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলে চারটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাইওয়ানের সংবাদমাধ্যম তাইওয়াননিউজ বলছে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ১০ টা ২০ মিনিটের দিকে রাজধানী তাইপে সিটির তাইপে সংশান বিমানবন্দরে পেলোসিকে বহনকারী বিমানের অবতরণের কথা রয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, তাইওয়ানের পূর্ব দিকের উপকূলে একটি বিমানবাহী রণতরীসহ চারটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রণতরী ইউএসএস রোনাল্ড রিগান দক্ষিণ চীন সাগর পাড়ি দিয়েছে এবং বর্তমানে ফিলিপাইন সাগরে, তাইওয়ান ও ফিলিপাইনের পূর্বে এবং জাপানের দক্ষিণে সেটি রয়েছে বলে মঙ্গলবার রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন মার্কিন নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তা।
জাপান-ভিত্তিক রিগান গাইডেড মিসাইল ক্রুজার ইউএসএস অ্যান্টিটাম, একটি ডেস্ট্রয়ার ও একটি ইউএসএস হিগিন্সের সাথে কাজ করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, যেকোনও পরিস্থিতিতে সাড়া দিতে সক্ষম হলেও এসব যুদ্ধজাহাজের মোতায়েন স্বাভাবিক এবং নিয়মিত। তবে এসব যুদ্ধজাহাজের সুনির্দিষ্ট অবস্থানের ব্যাপারে ওই মার্কিন কর্মকর্তা মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
চীনের হুঁশিয়ারির জবাবে মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জন কিরবি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পেলোসির তাইওয়ানে যাওয়ার অধিকার রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র চীনের হুমকিকে ভয় পায় না। যদিও পেলোসি তাইওয়ানে যাবেন কিনা তা নিশ্চিত করেননি তিনি। পেলোসির তাইওয়ান সফর বিশ্বজুড়ে মানুষের মনযোগের কেন্দ্রে রয়েছে। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪ এর তথ্য অনুযায়ী, পেলোসির বিমান এসপিএআর১৯ এর অব্স্থান জানার জন্য ফ্লাইটরাডারের ওয়েবসাইটে ৩ লাখ মানুষ ভিজিট করেছেন। তথ্য-উপাত্তে দেখা গেছে, তাইওয়ানের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেল ৩টা ৪২ মিনিটের দিকে বিমানটি যাত্রা শুরু করে। তবে সেই সময় বিমানটির গন্তব্য সম্পর্কে কোনও কিছু জানানো হয়নি।
বিমান চলাচলের মানচিত্রে ন্যান্সি পেলোসিকে বহনকারী বিমানটি দক্ষিণ চীন সাগর এড়িয়ে যেতে পারে বলে দেখানো হয়েছে। বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধপূর্ণ বিভিন্ন দ্বীপ ও সামুদ্রিক এলাকা নিয়ে প্রতিবেশি কয়েকটি দেশের মালিকানার দাবি রয়েছে। ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর ঘিরে বিতর্কিত এই সাগরে ও তাইওয়ানের আকাশসীমার কাছে ব্যাপক সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে চীন। এদিকে, চীনের সম্ভাব্য হুমকির বিপরীতে ন্যান্সি পেলোসি অন্য একটি বিমানে করে যাত্রা শুরু করেছেন বলে গুজব ছড়িয়েছে। ফ্লাইটরাডার২৪ পেলোসিকে বহনকারী এই বোয়িং সি-৪০ ক্লিপার বিমানকে উল্লেখ করে এসপিএআর২০ কোড ব্যবহার করেছে।