দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : ইসরায়েল ব্যাপকভাবে পশ্চিম তীরের জেনিন শহরের শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলা শুরু করছে। রাতভর শহরটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৪ জন নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা এবং নেতারা দাবি করেছে। স্থানীয়রা জানায়, ইসরায়েল বাহিনী সোমবার সকালে জেনিনে ১০টি বিমান হামলা চালায়। ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন থেকে ধোঁয়ার বের হতে দেখা যায়।
এ ছাড়া ইসরায়েলি সাঁজোয়া যানের বহর শহরের বিশাল শরণার্থী শিবিরের দিকে দিকে যাওয়ার খবর শোনা যায়। এদিকে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লা শহরের উত্তর প্রবেশপথে সোমবার রাতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে ২১ বছর বয়সী আরেক ফিলিস্তিনি যুবক মোহাম্মদ হাসানিন নিহত হয়েছেন। তবে জেনিনে নিহত চার জনের পরিচয় এখনও জানাতে পারেনি মন্ত্রণালয়। সব মিলিয়ে ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।
এছাড়া অন্তত ২৭ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৮জনের অবস্থা গুরুত্বর। জেনিনে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্টের পরিচালক মাহমুদ আল সাদি এএফপি বার্তা সংস্থাকে বলেছেন, ‘আকাশ থেকে বোমাবর্ষণ এবং ভূমি থেকে আক্রমণ হচ্ছে। বেশ কিছু বাড়ি এবং বিভিন্ন জায়গায় বোমা হামলা করা হয়েছে… চারদিক থেকে ধোঁয়া উঠছে।’ প্রকৃত হামলা হচ্ছে জেনিনের শরণার্থী শিবিরে। খালেদ আলাহমাদ নামে একজন ফিলিস্তিনি অ্যাম্বুলেন্স চালক রয়টার্স বার্তা সংস্থাকে এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আকাশ থেকে শিবির লক্ষ্য করে হামলা হয়েছিল, প্রতিবার আমরা প্রায় পাঁচ থেকে সাতটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে যাই সেখানে এবং আহত মানুষ নিয়ে ফিরে আসি।’
সোমবারের আক্রমণগুলো ছিল পশ্চিম তীরে ২০০৬ সালের পর প্রথম ইসরায়েলি ড্রোন হামলা। জেনিন এবং উত্তর ফিলিস্তিনি অঞ্চলে সামরিক অভিযান বৃদ্ধি এবং ফিলিস্তিনি গ্রামে বসতি স্থাপনকারীদের আক্রমণ করা হচ্ছে। ২১ জুন ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় কমপক্ষে তিনজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছিল। ১৯ জুন জেনিনে হেলিকপ্টার দিয়ে হামলা চালালে সাতজন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছিল। ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীরা ২০ জুন চার ইসরায়েলিকেও হত্যা করেছিল। ইসরায়েলিরা ট্রুমুস আইয়া গ্রামে হামলা চালিয়ে কয়েক ডজন গাড়ি ও বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার পরের দিন একজন ফিলিস্তিনি ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে।
সোমবারের হামলার পর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী একটি বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে,‘তারা জেনিন এলাকায় সন্ত্রাসী অবকাঠামোতে হামলা চালাচ্ছে। সন্ত্রাসীরা আস্তানা হিসাবে জেনিন ক্যাম্প ব্যবহার করে বেসামরিক মানুষের ক্ষতি করার চেষ্টা করলে আমরা চুপ থাকব না।’ তারা বলেছে, ওই ক্যাম্পটি একটি ‘সন্ত্রাসী ঘাঁটি’ ছিল। ইসরায়েলি বাহিনী বলছে, জেনিনে অবস্থিত এই শিবিরটি ‘উন্নত মানের পর্যবেক্ষণ এবং অনুসন্ধান কেন্দ্র।’এটি একটি অস্ত্র ও বিস্ফোরক স্থানের পাশাপাশি ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের জন্য একটি সমন্বয় ও যোগাযোগ কেন্দ্র হিসাবে কাজ করে।