দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : অধিকৃত পশ্চিম তীরে বন্দুকধারীর হামলায় দুই ইসরায়েলি নারী নিহত এবং অপর এক নারী গুরুতর আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও চিকিৎসকরা এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা গেছে, নিহত দুই নারী একটি গাড়িতে ছিলেন, যেটি জর্দান উপত্যকার হামরার বসতির কাছে গুলি করার পর বিধ্বস্ত হয়।স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, আনুমানিক ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী ওই দুই নারী সম্পর্কে বোন ছিলেন। ৪৮ বছর বয়সী তৃতীয় এক নারী আহত হয়েছেন, যিনি নিহতদের মা বলে জানা গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে এক স্বেচ্ছাসেবক জানিয়েছেন।
সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে এই ঘটনাটি একটি ইসরায়েলি গাড়ি ও একটি ফিলিস্তিনি গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ হিসেবে রিপোর্ট করা হয়েছিল। কিন্তু যখন সৈন্যরা সেখানে পৌঁছয়, তখন তারা ইসরায়েলি গাড়িতে বেশ কয়েকটি বুলেটের ছিদ্র দেখতে পায়। ফলে তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে এটি একটি আক্রমণ। সৈন্যরা ‘সন্ত্রাসীদের তাড়া করতে শুরু করেছে’ বলেও জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলি পাবলিক ব্রডকাস্টার কান জানিয়েছে, ২২টি বুলেটের আবরণ পাওয়া গেছে, যা কালাশনিকভ অ্যাসল্ট রাইফেলের বলে মনে হচ্ছে। ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান দক্ষিণ লেবানন ও গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টা পর এ গুলির ঘটনা ঘটল। সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা ১৭ বছরের মধ্যে লেবানন থেকে ইসরায়েলের ওপর চালানো সবচেয়ে বড় রকেট হামলার প্রতিশোধ নিয়েছে। ইসরায়েল রকেট হামলার জন্য ফিলিস্তিনি বিদ্রোহী গোষ্ঠী হামাসকে দায়ী করেছে।
সামরিক বাহিনীর তথ্য অনুসারে, বৃহস্পতিবার লেবানন থেকে উত্তর ইসরায়েলে ৩০টিরও বেশি রকেট ছোড়া হয়েছে। ইসরায়েলি বিমান হামলাগুলো তারই প্রতিক্রিয়া ছিল। ইসরায়েল রকেট হামলার জন্য হামাসকে দায়ী করেছে। পরে হামাস শাসিত গাজায় হামলা শুরুর পর ইসরায়েলে আরো ৪০টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়। অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলি পুলিশের দুই রাতের অভিযানের পর লেবানন থেকে রকেট হামলাগুলো চালানো হয়। ওই অভিযান ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সহিংস সংঘর্ষের সূত্রপাত করে এবং পুরো অঞ্চলজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
হামাস শুক্রবার গুলি চালানোর দায় স্বীকার করেনি। তবে এটিকে ‘আল-আকসা মসজিদের বিরুদ্ধে (ইসরায়েলের) চলমান অপরাধ এবং লেবানন ও গাজার বিরুদ্ধে বর্বর আগ্রাসনের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া’ বলে প্রশংসা করেছে। এদিকে, ইসরায়েলের পুলিশ কমিশনার কোবি শাবতাই আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সধারী সকল ইসরায়েলিকে তাদের অস্ত্র বহন শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এটি একটি ঘাতক হামলা, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী হুমকি কতটা প্রাসঙ্গিক।’
চলতি বছরের শুরু থেকেই ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সহিংসতা তীব্রতর হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে বিদ্রোহী ও বেসামরিক নাগরিকসহ ৯০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। অন্যদিকে যদি শুক্রবারের এই গুলির পেছনে ফিলিস্তিনিরা ছিল বলে নিশ্চিত করা হয়, তাহলে ফিলিস্তিনি হামলায় ১৭ জন ইসরায়েলি এবং একজন ইউক্রেনীয় নিহত হয়েছে, যার মধ্যে একজন ইসরায়েলি আধাসামরিক পুলিশ কর্মকর্তা বাদে বাকি সবাই বেসামরিক নাগরিক।