দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : অধিকৃত পশ্চিম তীরে সোমবার ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান চালিয়ে এক বিদ্রোহীসহ চার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ৬২ জন। এ ছাড়া সাত ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মী আহত হয়েছেন এবং হেলিকপ্টারে আগুন লেগেছে। এএফপির একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, আহত ফিলিস্তিনিরা অ্যাম্বুল্যান্সে করে উত্তর পশ্চিম তীরের শহরের ইবনে সিনা হাসপাতালে পৌঁছাতে থাকলে জেনিনজুড়ে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সহিংসতায় চারজন নিহত এবং কমপক্ষে ৬২ জন আহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে অনুসারে, নিহতদের মধ্যে একজন ১৫ বছর বয়সী আহমেদ সাকের নামে এক কিশোর রয়েছে। অন্য দুই জন নিহতের নাম খালেদ আসাসা (২১) এবং কাসাম আবু সারিয়া (২৯)। এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ আবু সারিয়াকে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর যোদ্ধা বলে দাবি করেছে।
জেনিনের ডেপুটি গভর্নর কামাল আবু আল-রুব এএফপিকে জানান, ইসরায়েলি বাহিনী ভোর ৪টার দিকে (সানীয় সময়) অভিযান শুরু করে। তিনি বলেন, ‘ফজরের নামাজের পর সেনাবাহিনী (জেনিন শরণার্থী) শিবিরে ও শহরে প্রচুর পরিমাণে হামলা চালায় এবং সেখানে তীব্র গুলিবর্ষণ হয়।’ স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২৫ মিনিটেও লড়াই চলছে বলে এএফপির একজন সাংবাদিক নিশ্চিত করেছেন।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রিচার্ড হেচট বলেছেন, ‘আমাদের পাঁচজন ইসরায়েলি সীমান্ত পুলিশ আহত হয়েছেন এবং দুই সেনা সামান্য আহত হয়েছেন। এদিকে একজন ফিলিস্তিনি গোয়েন্দা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে বলেছেন, ২০২২ সালের পর এই প্রথম জেনিনে অভিযানের সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে৷
জাতিসংঘের অধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, পরিস্থিতির অবনতিতে তিনি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ফিলিস্তিনিদের বেআইনি হত্যাকাণ্ড বেড়েছে, যার মধ্যে স্পষ্ট বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড রয়েছে।’ উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কট্টর-ডান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংঘাতে সহিংসতা বেড়েছে।
সরকারি সূত্র থেকে সংকলিত এএফপির তথ্য অনুযায়ী, বছরের শুরু থেকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাতের সঙ্গে যুক্ত সহিংসতায় কমপক্ষে ১৬৩ ফিলিস্তিনি, ২১ ইসরায়েলি, একজন ইউক্রেনীয় ও একজন ইতালীয় নিহত হয়েছে। পরিসংখ্যানে যোদ্ধাদের পাশাপাশি বেসামরিক নাগরিক ও ইসরায়েলি পক্ষ থেকে আরব সংখ্যালঘুর তিন সদস্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।