দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকায় নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে ‘পরামর্শের জন্য’ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিওর হায়াত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে সুনির্দিষ্ট কিছু উল্লেখ না করে বলেছেন, ইসরায়েল সম্পর্কে ‘দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বশেষ বিবৃতি’ অনুসরণ করে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের তীব্র সমালোচনা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এ ছাড়া সোমবার দেশটি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে (আইসিসি) ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের আগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আহ্বান জানিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের মন্ত্রী খুম্বুদজো এনতশাভেনি বলেছেন, এটি করতে ব্যর্থ হলে, তা বিশ্বব্যাপী শাসনের ‘সম্পূর্ণ ব্যর্থতার’ ইঙ্গিত দেবে।
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের বিষয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ব্রিকস গ্রুপের ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করার ঠিক আগে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত এলিয়াভ বেলোটসারকভস্কিকে প্রত্যাহার করা হলো। চীন ও রাশিয়াও এ গ্রুপের সদস্য। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যুদ্ধের জন্য একটি সাধারণ প্রতিক্রিয়া তৈরির আশা করা হচ্ছে।
এ ছাড়াও মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকার পার্লামেন্ট ইসরায়েলি দূতাবাস বন্ধ করা, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হওয়া পর্যন্ত এবং জাতিসংঘের সহায়তায় আলোচনার প্রতিশ্রুতি না দেওয়া পর্যন্ত সব কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত করবে কি না, তা নিয়ে ভোট দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশটির শাসক দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস এই প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে। তবে দল বা সরকার সংসদে এই প্রস্তাবকে সমর্থন করবে কি না, তা দেখার বাকি রয়েছে। ৭ অক্টোবর হামাসের শত শত যোদ্ধার আন্তঃসীমান্ত হামলায় প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় একটি বড় সামরিক অভিযান শুরু করে।
সেই হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয় এবং প্রায় ২৪০ জন জিম্মি হয় বলে তেল আবিব জানিয়েছে। অন্যদিকে হামাস শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েল তার প্রতিশোধমূলক অভিযান শুরু করার পর থেকে ওই অঞ্চলে অন্তত ১৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে নিরাপদে অবরুদ্ধ এলাকায় প্রবেশের সুযোগ পেতে ‘পর্যাপ্তসংখ্যক দিনের’ জন্য ‘জরুরি ও বর্ধিত মানবিক বিরতির’ আহ্বান জানিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনি ইস্যুতে সোচ্চার সমর্থক। তারা ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে এটিকে ‘সম্মিলিত শাস্তি’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না, তা তদন্ত করতে বাংলাদেশ, বলিভিয়া, কমোরোস, জিবুতিসহ দেশটি আইসিসির কাছে একটি রেফারেল জমা দিয়েছে। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা ইসরায়েল থেকে তাদের কূটনীতিকদের ফিরিয়ে নিয়েছে। পাঁচ বছর ধরে ইসরায়েলে দক্ষিণ আফ্রিকার কোনো রাষ্ট্রদূত নেই।