দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ বাড়ছে। মিয়ানমারে অনেক মানুষ ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে অন্যত্র সরে যাচ্ছে। আগেই স্থানীদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি চলছে। ধারণা করা হচ্ছে রবিবার ঘূর্ণিঝড়টি ১৭৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা (১০৮ মাইল) বেগে স্থলরেখায় আঘাত হানতে পারে। বাংলাদেশেও আঘাত হানার কথা রয়েছে তাই নেওয়া হয়েছে সর্তকতা।
ঝড়টি বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে এবং উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটি মিয়ানমারে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের সিত্তওয়ে এবং বাংলাদেশের কক্সবাজারের মধ্যবর্তী উপকূল অতিক্রম করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ বন্যা, ভূমিধস এবং ২ থেকে ২.৭ মিটার (৬.৬ ফুট থেকে ৮.৯ ফুট) অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে। এই বর্ষা মৌসুমে মিয়ানমারে এটিই চলতি বছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড় এবং ঝুঁকিপূর্ণ। ঝড়টি বাস্তুচ্যুত সম্প্রদায়ের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয় ইউওসিএইচএ। রাখাইনে ২ লাখ ত্রিশ হাজারের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ ক্যাম্পে বসবাস করছে।
ইউওসিএইচএ আরো যোগ করে বলেছে, ঝড়টি যে অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে যাবে সেখানে প্রায় ৬ মিলিয়ন মানুষে জন্য ইতিমধ্যেই মানবিক সহায়তার প্রয়োজন ছিল। অঞ্চলগুলো হলো রাখাইন এবং তিনটি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য চিন, ম্যাগওয়ে এবং সাগাইং। পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) নামে পরিচিত সামরিক এবং বেসামরিক সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে লড়াই এর মধ্যে এখন মোখা আরেক বড় হুমকি। সেনাবাহিনীর বিমান হামলা ও অগ্নিসংযোগের কারণে ইতিমধ্যেই মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে বাধ্য হয়েছে।
ইউএনওসিএইচ বলেছে তারা একটি বিশেষ দল প্রস্তুত রেখেছে এবং আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ফেডারেশন বলেছে তারাও মিয়ানমার রেড ক্রসের সঙ্গে কাজ করবে। তারা খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের পাশাপাশি উদ্ধার ও ত্রাণ সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখবে। মিয়ানমারের রাষ্ট্র পরিচালিত গ্লোবাল নিউ লাইট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাখাইনে সামরিক-নিযুক্ত কর্মকর্তারাও ঝড়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইউনাইটেড লিগ অফ আরাকান (ইউএলএ) এর মানবিক ও উন্নয়ন সমন্বয় অফিস বলেছে, ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের নিরাপদ এলাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে কাজ করছে। এর আগে ২০০৮ সালে সাইক্লোন নার্গিসের আঘাতে রাখাইনের দক্ষিণে ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।