দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : সাময়িক বিরতির পর আবার উত্তপ্ত ইরানের গণবিক্ষোভ পরিস্থিতি। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় খুজেস্তান প্রদেশ ও ইসফাহান প্রদেশে গত বুধবার পৃথক বন্দুক হামলায় নারী-শিশুসহ ১২ জনের বেশি নিহত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা হামলার জন্য সরকারকে দায়ী করছে। অন্যদিকে অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীদের ওপর দোষ চাপিয়েছে সরকার।
এর মধ্যে রাজধানী তেহরানে মেট্রো ট্রেনের যাত্রীদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের ভিডিও ছড়িয়েছে। পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুর তৃতীয় মাসের শুরুতে খুজেস্তান প্রদেশ ও ইসপাহানে জনতার ওপর হামলার ঘটনা ঘটল। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে ইরানে ২০১৯ সালের নভেম্বরে এক রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভে কয়েক শ মানুষ প্রাণ হারায়। দিনটিকে স্মরণ করতে রাজপথে জড়ো হয়েছিল সাধারণ মানুষ। এর জেরে গত মঙ্গলবার ও বুধবার ইরানের বেশ কয়েকটি শহরে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে।
ইরানি কর্তৃপক্ষ বলছে, গত বুধবার সন্ধ্যায় পশ্চিমাঞ্চলীয় ইজেহ শহরে দুই ‘সন্ত্রাসী’ মোটরসাইকেলে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে সাতজনকে হত্যা করে। তাদের মধ্যে একজন নারী এবং ৯ বছর ও ১৩ বছর বয়সী দুই শিশু রয়েছে।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ বলছে, বিক্ষোভে মানুষের জড়ো হওয়ার সুযোগ নিয়ে সাধারণ মানুষ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গুলি করে হত্যা করে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এ ঘটনায় আটজন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য এবং ইসলামী রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইজিআরসি) অন্তর্ভুক্ত আধাসামরিক বাহিনী বাসিজের তিন সদস্য রয়েছে।
ইজাহ শহরের বিক্ষোভকে ‘দাঙ্গা’ আখ্যা দিয়ে খুজেস্তান প্রদেশের বিচার বিভাগীয় প্রধান আলী দেঘানি বলেন, এ ঘটনার নেপথ্যে থাকা তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিকে ইস্পাহান প্রদেশে অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীর গুলিতে ছয়জন প্রাণ হারিয়েছে বলে দাবি করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। তাদের মধ্যে তিনজন বিক্ষোভকারী রয়েছে। মোটরসাইকেলে করে এসে অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীরা গুলি চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এ সময় বাসিজের দুই সদস্য এবং নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্য নিহত হন। এ ছাড়া বাসিজের এক এবং সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বিদেশভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, গত মঙ্গলবার ইরানের তিনটি ভিন্ন শহরে অন্তত তিন বিক্ষোভকারীকে হত্যা করা হয়।
বার্তা সংস্থা ফার্স বলছে, শিগগিরই হামলাকারীদের শনাক্ত করে বিচারের সম্মুখীন করার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। অসলোভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হেংগাউ গত বুধবার বলছে, বুকান, কাময়ারান, সানানদাজ ও মাশা আমিনির শহর সাকেজে বিক্ষোভ চলাকালে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ১০ জনকে হত্যা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।