দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক: সুদানে আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় দেশটির দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত একটি গ্রামে অন্তত ৮০ জন নিহত হয়েছে বলে একটি মেডিক্যাল সূত্র এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সেন্নার রাজ্যের জলগিনি গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে। গতকাল শুক্রবার এএফপির প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়। আধাসামরিক বাহিনী পেশাদার সামরিক বাহিনীর মতো, কিন্তু আইনিভাবে দেশের সামরিক বাহিনীর অংশ নয়।
জলগিনির চিকিৎসাকেন্দ্রের একটি সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, ‘বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ৫৫ জন মৃত ও কয়েক ডজন আহত অবস্থায় পেয়েছি এবং তাদের মধ্যে ২৫ জন শুক্রবার মারা গেছেন। এতে মৃতের সংখ্যা ৮০ জনে দাঁড়িয়েছে।’
স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেছেন, আধাসামরিক বাহিনী পূর্ণ শক্তিতে ফিরে আসার আগে প্রাথমিকভাবে স্থানীয় গ্রামবাসীদের প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়েছিল। এএফপিকে তিনি বলেন, ‘গতকাল সকালে তিনটি সামরিক যান জলগিনিতে আক্রমণ শুরু করে।
বাসিন্দারা প্রতিরোধ করলে আধাসামরিক বাহিনী পিছু হটে যায়। কিন্তু পরে তারা আরো বেশ কয়েকটি গাড়ি নিয়ে ফিরে আসে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি আরো বলেন, ‘ফিরে এসে তারা গুলি চালাতে শুরু করে, বাড়িঘরে আগুনও দেয় এবং অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে। ঘটনার পরদিন শুক্রবারও কিছু লাশ রাস্তায় পড়ে ছিল।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যস্থতাকারীদের আয়োজনে সুইজারল্যান্ডে যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু হলেও সুদানের সেনাবাহিনী এতে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এর আগে সৌদি আরবের জেদ্দায় কয়েক দফা আলোচনা যুদ্ধ বন্ধের কোনো চুক্তিতে পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছে
আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের নিয়মিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। জুন মাসে সেনার রাজ্যের রাজধানী সিনজা দখল করে।
জাতিসংঘের সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন অনুসারে, সেনারে লড়াইয়ে প্রায় সাত লাখ ২৬ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তাদের অনেকেই যুদ্ধ থেকে পালিয়ে উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার দেশটির অন্যান্য অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিল।
আরএসএফ রাজধানী খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ, কেন্দ্রীয় রাজ্য আল-জাজিরা, পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর অঞ্চল এবং দক্ষিণে কোরদোফানের বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে।