দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক: জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ বলছে, ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শিশু অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধের কারণে তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। সংস্থাটি অবরুদ্ধ উপত্যকায় দুর্ভিক্ষের ‘প্রকৃত’ ঝুঁকি এড়াতে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।
প্রেস টিভির খবরে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ইউনিসেফের শিশু পুষ্টি ও উন্নয়ন বিষয়ক পরিচালক ভিক্টর আগুয়েও বলেন, ‘আমরা অনুমান করি যে, ৫০ হাজারের বেশি শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে এবং তাদের জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসার প্রয়োজন।’
জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা (এফএও) এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) গাজার পরিস্থিতিকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক খাদ্য ও পুষ্টি সংকটগুলোর মধ্যে একটি’ বলে বর্ণনা করার পরপরই এবার ইউনিসেফ এই তথ্য জানালো। আগুয়েও বলেন, ‘এটি মনে রাখা জরুরি যে, গাজার জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক যারা এই ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হচ্ছে তারা শিশু।’
গাজায় গত সপ্তাহের সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি দেখেছি কিভাবে বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে কয়েক মাস যুদ্ধ এবং কঠোর বিধিনিষেধের ফলে শিশুদের পুষ্টির জন্য বিপর্যয়কর পরিণতি দেখা দিয়েছে। একইভাবে খাদ্য, স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা ব্যবস্থার পতন ঘটেছে।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘গাজায় দুর্ভিক্ষ এবং বড় আকারের গুরুতর পুষ্টি সংকটের ঝুঁকি বাস্তব। এটি প্রতিরোধ করার একমাত্র উপায় হলো, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং পুরো গাজা উপত্যকায় বড় ধরনের মানবিক সাহায্য প্রবেশিকারের উদ্যোগ নেওয়া।’
ইসরায়েলি দখলদারিত্বের প্রতিবাদে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, এই হামলায় প্রায় ১২০০ নিহত ও দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস যোদ্ধারা। এর জবাবে ওই দিনই গাজায় বিমান হামলা ও পরে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
এইসঙ্গে গাজা ভূখণ্ড সম্পূর্ণ অবরোধ ঘোষণা করে, সেখানে বসবাসরত ২০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনিদের জ্বালানি, বিদ্যুৎ, খাবার ও পানি বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এতে করে ১০ মাসেরও বেশি সময় ধরে মানবিক সংকটে দিন পার করছেন ফিলিস্তিনিরা।
গাজায় গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৪১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহতের সংখ্যা ৯৪ হাজার ছাড়িয়েছে।