দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত থাকায় জেলের বাইরে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন কি না এ নিয়ে সরকারের চার মন্ত্রী দুই ধরনের মত দিয়েছেন। সোমবার অমর একুশে বইমেলায় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘বেগম জিয়ার কারাদণ্ড আছে। তিনি নির্বাচন করার জন্য যোগ্য নন।’ বুধবার কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছিলেন, ‘খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন।’ বৃহস্পতিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও বলেছেন সেই কথা। কিন্তু তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেছেন, ‘শর্ত অনুসারে খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন না।’
গত সোমবার, বুধবার ও আজ বৃহস্পতিবার সরকারের চার মন্ত্রীর পক্ষ থেকে দুই ধরনের বক্তব্য এলো। সোমবার খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন কি না―এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম জিয়ার কারাদণ্ড আছে। এই অবস্থানটা তার নির্বাচন করার পক্ষে নয়। তিনি নির্বাচন করার জন্য যোগ্য নন।’
পরে গতকাল বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ‘কেন উনি (খালেদা জিয়া) রাজনীতি করতে পারবেন না? উনি জেলে থেকেও রাজনীতি করতে পারবেন, দলকে নির্দেশনা দেবেন। তবে সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে আইন অনুযায়ী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার আইনমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রী দুই রকম মত দিয়েছেন। তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ও বয়স বিবেচনায় শর্তসাপেক্ষে কারাগারের বাইরে বাসায় থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেই শর্ত অনুযায়ী তিনি রাজনীতি করতে পারেন না।’
আর আইনমন্ত্রী রাজধানীর বীজ মিলনায়তনে বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয় দুটি শর্তে। একটি হলো বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন। আরেকটি হলো দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। রাজনীতি করতে পারবেন না―এমন কোনো শর্ত ছিল না।’
আনিসুল হক এও বলেছেন, ‘উনি নির্বাচন করতে পারবেন না, কারণ উনি দণ্ডিত। রাজনীতি করতে পারবে না―এমন কথা কোথাও নাই।’
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে যান খালেদা জিয়া। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শেষে সে বছরের অক্টোবরে সাজা বেড়ে দ্বিগুণ হয় বিএনপি নেত্রীর। একই মাসে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আরো সাত বছরের সাজা হয় তার। পরে ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ছিলেন তিনি। তার জামিনের আবেদন বারবার নাকচ হওয়ার মধ্যে স্বজনরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে মুক্তির আবেদন করলে সরকারপ্রধানের নির্বাহী আদেশে সে বছরের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান তিনি।