দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : সুন্দরবনে আগুন লাগার কারণ গভীরভাবে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (৬ মে) মন্ত্রিসভার বৈঠকে নির্ধারিত আলোচনার বাইরে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি জানান, সুন্দরবনে লাগা আগুন পুরোপুরি না নেভা পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যেতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
মাহবুব হোসেন বলেন, সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও ফায়ারসার্ভিসের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সুন্দরবনের আগুন শতভাগ নিভে যায় নাই, তবে নিয়ন্ত্রনে আছে। বনের আগুন স্বাভাবিক আগুন না। আগুন নিভে গেলেই সাথে সাথে ঘোষণা করা যায় না যে আগুন নিভে গেছে। যে কোনও লতাপাতায় সুপ্ত থাকে। আগুন আবার জ্বলে উঠে। তাই খুব ক্লোজ মনিটরিং হচ্ছে আগামী ৭ দিন এমন পর্যবেক্ষণে থাকবে। তারপর পরিস্থিতির আলোকে সিদ্ধান্ত হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফায়ার সার্ভিস সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে।
শনিবার দুপুর নাগাদ আমরবুনিয়া এলাকায় আগুন ও ধোঁয়া দেখে বনকর্মীরা ছুটে গিয়ে নেভানোর চেষ্টা করে। সঙ্গে যোগ দেয় স্থানীয় গ্রামবাসীও। তবে তাতে আগুন নেভানো যায়নি। সন্ধ্যায়ই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বনরক্ষী ও থানা পুলিশের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট। তবে রাতের কাজ শুরু না করে তারা ফিরে যান।রোববার সকাল সাতটা থেকে সমন্বিতভাবে শুরু হয় আগুন নেভানোর কাজ। বনরক্ষী ও ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি আগুন নেভাতে যোগ দেয় নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার।
সারাদিন চেষ্টার পর রোববার রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার খবর দেয়া হয়। রাতে বিরতির পর সোমবার সকাল সাতটা থেকে আবারও আগুন নেভানোর কাজে হাত দেয় বনবিভাগ, নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস। তাদের সহযোগিতা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও।
বন বিভাগের বিভিন্ন কর্মকর্তারা জানান, বনের প্রায় পাঁচ একর এলাকায় দুইদিন ধরে বিক্ষিপ্ত ভাবে আগুন জলে। মাটিতে পড়ে থাকা লতাপাতা, ডালপালা আর মাটির নিচে গাছের শিকরের মধ্যে আগুনের বিস্তৃতি ছড়িয়ে পড়ে। আগুন ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ওই জায়গার চারদিক থেকে প্রায় পাঁচ একর জায়গা জুড়ে ফাইয়ার কাটা হয়। যেখানে আগুন রেগেছে সেই এলাকাটি সুন্দরবনের লোকালয় সংলগ্ন উঁচু হয়ে যাওয়া বনভূমি। ওই স্থানটি নিয়মিত জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয় না।
ফলে সেখানে কয়েক ইঞ্চি পুরো মরা পাতা এবং ডালপালার আস্তর জমে রয়েছে। আগুন গাছের উপরে বা ডালপালায় ছড়িয়ে না পড়ে শুধু মাত্র মাটির উপর বিক্ষিপ্ত ভাবে বিস্তৃত হয় বলে বন কর্মকর্তারা জানান। সুন্দরবনে কীভাবে আগুন লাগলো, কত এলাকাজুড়ে ছড়িয়েছে এবং কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে রোববার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বনবিভাগ।