1. bazmedialink7@gmail.com : Baz Alam : Baz Alam
  2. mdkaif01133@gmail.com : md :
  3. talhanrcc2014@gmail.com : Talha : MD TALHA
  4. deshbidesh2022@gmail.com : Tuhin Ahmed : Tuhin Ahmed
নিম্ন আয়ের মানুষ'রা সংসারের খরচ কমানোর চেষ্টায়... - DeshBideshNews
November 25, 2024, 2:36 am
 

নিম্ন আয়ের মানুষ’রা সংসারের খরচ কমানোর চেষ্টায়…

  • Update Time : Monday, March 28, 2022
  • 349 Time View

নিজস্ব প্রতিনিধি : খাদ্যপণ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে দুই শতাধিক মানুষ প্রখর রোদ উপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে আছেন। এরই মধ্যে ভিড় ঠেলে ব্যাগ হাতে বেরিয়ে এলেন একজন মধ্য বয়সী মহিলা, গাল বেয়ে নেমে আসা ঘামগুলো চালান করে দিলেন শাড়ির আঁচলে। আপা, কী কিনলেন? জিজ্ঞাসা করতেই একটি মুচকি হাসি দিয়ে বললেন- দুই কেজি সয়াবিন তেল, দুই কেজি ডাল।

আজ বাংলাদেশ সময় দুপুরে রাজধানীর বাড্ডা জাগরণী সংঘ মাঠে এইসব দৃশ্য দেখা গেছে।

মেয়ে’কে স্কুলে দিয়ে টিসিবির পণ্য নিতে লাইনে দাঁড়ান সোহাগী আক্তার। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও পণ্য পাননি। পরে স্কুলে গিয়ে মেয়েকে নিয়ে এসে আবার লাইনে দাঁড়ান তিনি। পরে পণ্য নিয়ে বাড়ি ফেরেন মা ও মেয়ে।

টিসিবির পণ্য নিতে আসা আফরোজা পণ্য কিনে খুশি হলেও মুহূর্তেই কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখা গেল। আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি ১ হাজার ১০০ টাকা দিতে হবে। টাকা জমিয়েও রেখেছেন। সেখান থেকে ৪৬০ টাকা বের করে তেল-ডাল কিনতে হয়েছে তাঁকে। মঙ্গলবার সকালের মধ্যে স্বামী ওই টাকা জোগাড় করতে না পারলে কারও কাছে হাত পাততে হবে। আফরোজা বললেন- সময়মতো কিস্তি দিতেই হবে। এটা মানসম্মানের ব্যাপার।

আফরোজার স্বামী ভ্যানচালক কাইয়ুম ইউপি চত্বরের বাইরে স্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সংসারে তাঁদের দুই মেয়ে। তিনি বললেন- পরিবারে মাসে ৬০ কেজি চাল, ৫ লিটার সয়াবিন তেল, ২ কেজি ডাল, ২ কেজি চিনি, ৪ কেজি পেঁয়াজ লাগে। ডিম ও মাছ খাওয়া হয় মাঝেমধ্যে। এ ছাড়া আলু, কুমড়া, কপি, কচুতেই সংসারের রান্না চলে তাঁদের। সাম্প্রতিক সময়ে খরচ কমিয়েছেন তেলসহ অন্যান্য পণ্যের।

ফাজিলপুর ইউপির পাশে রানীগঞ্জ বাজারে মুদিখানায় চাল (বিআর-২৮) প্রতি কেজি ৫৫ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৭৫, পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪০, চিনি প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেল। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন- প্রায় তিন মাস ধরে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। মুদিদোকানদার সোহেল রানা বলেন- ৩ মাস আগেও সয়াবিন তেল বিক্রি করেছেন প্রতি লিটার ১৪২ টাকা, চিনি প্রতি কেজি ৬৮-৭০ ও বিআর ২৮ চাল বিক্রি করেছেন ৪৮-৫০ টাকায়। এখন সেখানে প্রতিটি পণ্যের গায়ে ৭-১২ টাকার বেশি যোগ হয়েছে।

গত দুই বছরের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যে বেড়েছে, তা জেলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের হিসাব দেখলেই বোঝা যায়। অধিদপ্তরের হিসাব বলছে- বাজারে বোরো (সরু) চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৮-৬৪, বোরো (মাঝারি) চাল ৫০-৫৬ টাকায়। খোলা আটার দাম প্রতি কেজি ৩২-৩৫ টাকা, খোলা ময়দা ৪৪-৪৮, মসুর ডাল ৯৫-১০০, খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৪৪-১৪৬, ডিম প্রতি হালি ৩৪-৩৬ টাকা।

ঢাকায় কনকর্ড নামের একটি কোম্পানিতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন ফরিদুল ইসলাম (৩৮)। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে করোনায় আক্রান্ত হলে তিন মাস রোগে ভুগে আবার রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করেন। রোজ হাজিরা হিসেবে পান ৪৫০-৫০০ টাকা। তাও কোনো কোনো দিন কাজ জোটে না। ফরিদুল জানান, দৈনিক ৩০০-৩৫০ টাকার খরচ লাগে বাড়িতে। দুই মেয়ের স্কুলে যাতায়াত, পড়ালেখাসহ অন্যান্য খরচ জোগাতে পারছেন না। হঠাৎ পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে ওষুধ কিনবেন, এমন অবস্থাও নেই। মাসে সাড়ে চার লিটার সয়াবিন তেল কিনতে হতো। সেখানে চলতি মাসে এখন পর্যন্ত তিন লিটারের মতো কিনেছেন। সব দিক থেকে খরচ কমানোর চেষ্টা করছেন।

মো. মিলন শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসে চাকরি করে মাসে বেতন পান ১০ হাজার টাকা। দুই ছেলে পড়ালেখা করছে। স্ত্রী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। মিলন বলেন- মাসে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকার ওষুধ কিনতে হয়। তারপর যা থাকে, তা দিয়ে কোনোমতে বেঁচে আছি। মো. মিলন আরো বলেন- প্রতিদিন ৮০-১০০ টাকা যায় কাঁচাবাজারের পেছনে। এক তরকারিতেই ভাত খেতে হচ্ছে।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ