দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক: দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটির পর তিন-চার দিনের মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। বুধবার (৯ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। আসিফ নজরুল বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু করার বিষয়ে একটা বড় অগ্রগতি আজ হয়েছে। কারণ আজ অনেক নতুন বিচারক (হাইকোর্টে) নিয়োগ হয়েছে।
আমরা যখন ট্রাইব্যুনালে বিচারক নিয়োগের জন্য বলতাম তখন বলা হতো বিচারক সংকট রয়েছে। আশা করি, সংকটটা দূর হয়েছে। এখন ট্রাইব্যুনালে বিচারক নিয়োগ হলে আমাদের কাজের একটা অগ্রগতি হবে। ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘যতটুকু জানি তারা (প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থা) বিশ্বাসযোগ্য মামলা উপস্থাপনে বেশ কিছু আলামত ও তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে ফেলেছে। আমরা বিচার করব।
ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচারসংক্রান্ত এক প্রশ্নে আসিফ নজরুল বলেন, ‘কে উপস্থিত আর কে অনুপস্থিত, সেটা দেখার বিষয় নয়। আমাদের আইনে অনুপস্থিত ব্যক্তির বিচারের বিধান আছে। তিনি যে দেশে গেছেন, সেই দেশের সঙ্গে যদি আমাদের প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকে তাহলে তাকে আমরা প্রত্যর্পণ করা বা দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য চিঠি লিখতে পারি।
আমাদের সব অপশন খোলা আছে। তবে বিচার করার লক্ষ্যে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। মাসখানেকের মধ্যে হয়তো আমরা ফুল স্কেলে (পুরোদমে) বিচার বিচার শুরু করতে পারব। সম্ভবত এক সপ্তাহের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন হয়ে যাবে। ছুটির পর ৩-৪ দিনের মধ্যে এটা হয়ে যাবে।
শেখ হাসিনা সরকারের অনুগত হয়ে কাজ করা সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের পদত্যাগ ও অপসারণের দাবি উঠেছে আইনজীবীদের থেকে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘বিচারকদের সরানোর বিয়টি আমাদের সিদ্ধান্ত নয় বা আমাদের দাবি নয়। ছাত্র-জনতা যারা আন্দোলন করেছিল, যারা এই মহান জুলাই গণবিপ্লব করেছিল তারা মনে করছে কোনো কোনো জজ ফ্যাসিস্ট শক্তির হয়ে কাজ করেছেন। ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের প্রতিপক্ষ ছিলেন। শুধু তা-ই নয়, এর আগেও যে সড়ক আন্দোলন (নিরাপদ সড়ক আন্দোলন) হয়েছিল, তখন তাদের (বিচারকদের) ভূমিকা ছিল ফ্যাসিস্ট শক্তির পক্ষে। দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের বিপক্ষে। মানবাধিকারপ্রত্যাশী মানুষের বিপক্ষে। ফলে তারা এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে বলছেন।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমরা ছাত্র-জনতার ইচ্ছার ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়ার কথা চিন্তাই করি না। যেহেতু গণতান্ত্রিক দেশ সেহেতু তারা তাদের (ছাত্র-জনতা) ইচ্ছার কথা বলছেন। যাদের বিরুদ্ধে বলা হচ্ছে, এটা তাদের ব্যাপার। তারা (বিচারকরা) তাদের মত করে ভাববেন, তারা (বিচারকরা) কী করবেন।’
সুপ্রিম কোর্ট আইন মন্ত্রণালয় থেকে সম্পূর্ণ পৃথক একটা প্রশাসন উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট দেশের সর্বোচ্চ আদালত। দেশের সর্বোচ্চ আদালতে যারা অভিভাবক (প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের বিচারপতি) আছেন, তারা যথেষ্ট জ্ঞানী, যথেষ্ট সম্মানিত, যথেষ্ট পরিণত। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তারা কী ব্যবস্থা নেবেন, সেটা তারাই বিবেচনা করবেন। আমরা কিছু বলে দিতে পারব না।