দেশ বিদেশ ডেস্ক : আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খোলা বাজারে বাড়ছে ডলারের দাম। সোমবার খোলা বাজারে ডলারের দাম ১০৪ টাকা অতিক্রম করেছে। এর আগে গত মে মাসের মাঝামাঝি সময় খোলা বাজারে ডলারের দাম ১০২ টাকা অতিক্রম করেছিল। রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা, পল্টন এলাকায় মানি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
ঈদের ছুটির পর একাধিকবার আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৃহস্পতিবার সর্বশেষ ৯৪.৪৫ টাকা দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে। খোলা বাজারে আজ ডলারের দাম ১০৪.৫০ টাকা থেকে ১০৪.৮০ টাকা হয়েছে। এর আগে গত মে মাসের মাঝামাঝি খোলা বাজারে ডলারের দাম ১০২ টাকা অতিক্রম করেছিল। পরে ধীরে ধীরে তা কমলেও ফের ডলারের দামে ঊর্ধ্বমুখী ধারা লক্ষ করা যাচ্ছে।
রাজধানীর মতিঝিলের অর্নেট মানি এক্সচেঞ্জের এক কর্মকর্তা বলেন, ডলারের সংকট চলছে। আমার কাছে খুব বেশি ডলার নেই। আজ ডলারের দাম ১০৪ টাকা অতিক্রম করেছে। সর্বশেষ আমরা প্রতি ডলার ১০৪.৬০ টাকায় বিক্রি করছি। কিনেছি ১০৩.৫০ টাকা থেকে ১০৪ টাকায়। পুরানা পল্টনের আইএমই ইন্টারন্যাশনাল মানি চেঞ্জারের কর্মকর্তা আরাফাত রহমানও একই রকম তথ্য জানিয়েছেন।
পুরানা পল্টনের চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জের আমিনুল এহসান বলেন, আমরা আজ ১০৪.৫০ টাকা থেকে ১০৪.৮০ টাকায় ডলার বিক্রি করেছি। হঠাৎ ডলারের দাম বেড়ে গেছে।
মানি এক্সচেঞ্জ কর্মকর্তা ও ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। আমদানির সঙ্গে সঙ্গে রপ্তানি আয় সেভাবে বাড়েনি। এতে বাণিজ্য ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহে খুব বেশি গতি আসছে না। আগের চেয়ে রেমিট্যান্স আহরণ কম। ডলারের চাহিদা বাড়ায় দামও বাড়ছে। দিন দিন ডলারের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
এদিকে, বাজার স্থিতিশীল রাখতে দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলোর কাছে চাহিদার বিপরীতে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে। তবু ডলারের বাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না। উল্টো দাম বাড়ছে। ডলারের বাজার কবে স্থিতিশীল হবে, তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। রেমিট্যান্স আহরণ বাড়লে ডলারের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ডলারের দাম পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। এর পর থেকে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলার সংকট শুরু হয়, যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। ২০২১ সালের আগস্টের শুরুতেও আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম একই ছিল।