দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-বিএফআইইউ)। বুধবার (২৪ আগস্ট) এ হিসাব চাওয়া হয়। ২৯ আগস্টের মধ্যে তাকসিমের ব্যাংকের যাবতীয় হিসাব ও লেনদেনের তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে। বিএফআইইউর এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১৭ আগস্ট ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে তাকসিম এ খান ১৩ বছর ধরে বেতনসহ কত টাকা নিয়েছেন, তার হিসাব চায় হাইকোর্ট। এসব হিসাব জানাতে ওয়াসার বোর্ডকে নির্দেশ দেন আদালত। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
তিনি জানান, ঢাকা ওয়াসার এমডিকে অপসারণে নিস্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং তাকে অপসারণের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছে আদালত।
চিঠিতে তাকসিম এ খানের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর- ২৬৯৬৫৩৬০৯০৩৪৪, পাসপাের্ট নম্বর- ই০০২৩২৮৩, ওসি২২৬০৩৫২, ওসি৭০৭২৬২৬, জন্ম তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি তাকসিম এ খানের পরিবারের সদস্যদের বর্তমানে ও আগে পরিচালিত ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় তথ্য ও দলিলাদি ও শুরু থেকে হালনাগাদ লেনদেন বিবরণী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে।
২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগ পান প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। এরপর ধাপে ধাপে সময় বাড়িয়ে তিনি এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। বিতর্কিত তাকসিম এ খানের পুনর্নিয়োগের ক্ষেত্রেও বিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো, ঠিকাদার নিয়োগে সিন্ডিকেট, ঘুষ লেনদেন, পদ সৃষ্টি করে পছন্দের লোককে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, অপছন্দের লোককে ওএসডি করাসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াসার প্রকল্পগুলো নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয় না। নানা প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানো হয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রকল্পের নকশা ও বিবরণ অনুযায়ী কাজ করা হয় না। প্রকল্পে পরামর্শক ও ঠিকাদার নির্বাচনের ক্ষেত্রে এমন কিছু শর্ত আরোপ করা হয়, যাতে নির্দিষ্ট সংখ্যক ঠিকাদার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেন। এছাড়া ঠিকাদার নির্বাচনের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট পদ্ধতি ও রাজনৈতিক পরিচয় এবং কাজ পাওয়ার বিনিময়ে ঘুষ লেনদেন বর্তমানে একটি প্রচলিত প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দুদকের প্রতিবেদন বলছে, ব্যক্তিমালিকানাধীন গভীর নলকূপ স্থাপন, মিটার রিডিং ও রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রেও ব্যাপক দুর্নীতি হয়।