দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, সুদানে নদুই পক্ষের দন্দে এ পর্যন্ত ৪২০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে এবং আহত হয়েছে ৩ হাজার ৭০০ জন। এছাড়াও, ইউনিসেফ নিশ্চিত করেছে, শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সুদান যুদ্ধে। তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদন অনুসারে, যুদ্ধে কমপক্ষে নয়জন শিশু নিহত এবং ৫০ জনের বেশি শিশু গুরুতর আহত হয়েছে।
ডব্লিউএইচও-এর পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় আঞ্চলিক অফিস টুইটারে জানিয়েছে, সুদানে লড়াই শুরু হওয়ার এক সপ্তাহে ৩ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে এবং ৪২০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। স্বাস্থ্য খাতের সঙ্গে জড়িতদের ওপর ১৪টি হামলা হয়েছে। ওই হামলায় ৮ জন নিহত এবং ২ জন আহত হয়েছে। ডব্লিউএইচও এই হামলায় নিন্দা জানিয়েছে এবং স্বাস্থ্যখাত সুরক্ষার আহ্বান জানায়।
ডব্লিউএইচওর মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস জাতিসংঘের প্রেস কনফারেন্সে ভাষণ দিয়েছেন, যেখানে তিনি সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এর মধ্যে চলমান সঙ্কটের কথা তুলে ধরেছেন। সুদানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, কাজ বন্ধ করে দিয়েছে এমন স্বাস্থ্য সংস্থার সংখ্যা ২০। এছাড়াও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংখ্যা অনুসারে, বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা স্বাস্থ্য সংস্থার সংখ্যা ১২।
এদিকে, ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এল্ডার বলেছেন, ‘বরাবরের মতোই যুদ্ধ শিশুদের জন্য বিধ্বংসী। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কমপক্ষে নয়জন শিশু নিহত এবং অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। এই সংখ্যা বাড়তে থাকবে। যতক্ষণ যুদ্ধ চলবে। সুদানের রাজধানী খার্তুমে সামরিক বাহিনীর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের মধ্যে লড়াই অব্যাহত থাকায় যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু দেশ তাদের কূটনীতিক ও নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে। ঈদুল ফিতরের জন্য যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও সহিংসতা থামেনি। সুদানের সামরিক নেতৃত্বের দুই অংশের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বের কারণে গত সপ্তাহে এই সহিংসতা শুরু হয়।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, খার্তুম শহরে বোমা বিস্ফোরণ, গোলাবর্ষণ ও বন্দুকের গুলিবিনিময় অব্যাহত রয়েছে। খার্তুমের বাসিন্দারা জানান, শহরে ঈদের সময়টায় পরিবেশ উৎসবমুখর থাকে, সেখানে এখন বিরাজ করছে ভূতুড়ে পরিবেশ। সুদানে লড়াই অব্যাহত থাকায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও চীন তাদের কূটনীতিক ও নাগরিকদের সে দেশ থেকে সরিয়ে নিতে যাচ্ছে। সুদানের সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সেনাবাহিনীর প্রধান ফাত্তাহ আল-বুরহান বিদেশিদের সরিয়ে নেওয়ার নিরাপদ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে রাজি হয়েছেন।
তরা আরো জানান, এ চারটি দেশ তাদের কূটনীতিকদের নিজ নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে সামরিক বিমান ব্যবহার করবে। আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এ প্রক্রিয়া শুরু হবে। এ ছাড়া সৌদি আরবও ঘোষণা করেছে, তারা তাদের নাগরিকদের সুদান থেকে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করছে। সর্বশেষ খবরে বলা হয়, সৌদি মিশনের কূটনীতিকরা ইতোমধ্যেই সড়কপথে পোর্ট সুদানে গিয়ে সেখান থেকে নিজ দেশের উদ্দেশে বিমানে উঠেছেন। সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, জর্দানের রাষ্ট্রদূতরাও একই পথে স্বদেশে ফিরে যাবেন। নিরাপত্তাঝুঁকির কারণে এর আগে বিদেশি নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায়নি।