দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : কর সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল দলের চেয়ারম্যান এবং দপ্তরবিহীন মন্ত্রী নাদিম জাহাওয়িকে বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, নাদিম জাহাওয়ি মন্ত্রীদের আচরণবিধির গুরুতর লঙ্ঘন করেছেন। জাহাওয়ি অর্থমন্ত্রী থাকার সময় পরিশোধ না করা করের জন্য জরিমানা দিয়েছেন, এ তথ্য প্রকাশ পাওয়ার পর ঋষি সুনাক তার উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলেছিলেন। উপদেষ্টা তার সিদ্ধান্তে বলেছেন, এমপি জাহাওয়ি তার আর্থিক বিষয়ে খোলামেলা হতে পারেননি। নাদিম জাহাওয়ির কাছে লেখা চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী সুনাক লিখেছেন, ‘এ কারণেই আমি আপনাকে সরকারের পদ থেকে অপসারণের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছি।’
জবাবে জাহাওয়ি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন তিনি সরকারে থাকার সময়কার নিজের কৃতিত্বের জন্য গর্বিত। এ প্রসঙ্গে তিনি করোনা টিকা দেওয়া ও সুষ্ঠুভাবে রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আয়োজনের কথা তুলে ধরেন। তবে জাহাওয়ি ক্ষমা চাননি বা তার কর পরিশোধ সংক্রান্ত বিষয়ের কথা উল্লেখ করেননি। তিনি আগামী বছরগুলোতে পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার অনুসন্ধানের তথ্য দিয়ে সার লরি বলেছিলেন, রাজস্ব ও শুল্ক বিভাগ (এইচএমআরসি) প্রথম ২০২১ সালের এপ্রিলে জাহাওয়ির সাথে যোগাযোগ শুরু করে। জাহাওয়ি ২০২২ সালের ৫ জুলাই অর্থমন্ত্রী হওয়ার সময় স্বার্থসংশ্লিষ্ট একটি ঘোষণাপত্র পূরণ করেন যাতে তার করের বিষয়ে রাজস্ব ও শুল্ক বিভাগের তদন্তের কোনো উল্লেখ ছিল না। ১৫ জুলাই এইচএমআরসি থেকে একটি চিঠি পাওয়ার পরই কেবল তিনি ফর্ম হালনাগাদ করেছিলেন। ঋষি সুনাকের উপদেষ্টা সার লরি বলেন, নাদিম জাহাওয়ি স্বার্থের সংঘাত ঘোষণা করার বিষয়ে মন্ত্রীদের আচরণবিধির শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
বিবিসিকে বলা হয়েছে, কর বিভাগকে নাদিম জাহাওয়ির দেওয়া মোট অর্থের পরিমাণ ছিল জরিমানাসহ ৫০ লাখ পাউন্ডের মতো। নীতি ভঙ্গ ও স্বচ্ছতার অভাবের সমালোচনার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা জাহাওয়ির তদন্তে সহায়তা করার সদিচ্ছার প্রশংসাও করেছেন। সবশেষে উপদেষ্টা যোগ করেছেন, ‘তবে এই কারণগুলো আমার সামগ্রিক এ রায়কে বদলাতে পারে না যে, একজন মন্ত্রী হিসাবে জাহাওয়ির আচরণের মান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনি সরকারের সদস্যদের কাছ থেকে যে উচ্চ পর্যায়ের আশা করেন, তার চেয়ে নিচে নেমে গিয়েছে।’ বিরোধী দলগুলো বলছে, ঋষি সুনাক জাহাওয়িকে বরখাস্ত করতে খুব বেশি সময় নিয়েছেন। প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি বলেছে, সরকার কলঙ্কের মধ্যে ডুবে আছে।
দপ্তর না থাকলেও জাহাওয়ি ছিলেন ক্যাবিনেট সদস্য অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের দলের শীর্ষ মুখগুলোর অন্যতম। রবিবার সকালেই স্পষ্ট হয়ে যায় তিনি দল ও সরকার উভয় পদ হারিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তাকে বরখাস্ত করার চিঠি টুইটারের পোস্ট করেন। কর নিয়ে অনিয়মের বিষয়টির বিশদ প্রকাশ পেতে এত দেরি হওয়ার বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন দলেই প্রশ্ন উঠেছে। তার এমপি পদ বহাল থাকবে কি না তা নিয়েও গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।