দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক: গাজায় গণহত্যা পরিচালনার বিষয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় আজ শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) প্রাথমিক রায় দেবে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত।
এই রায়টি জানতে পুরো মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্ব অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। প্রাথমিকভাবে দেওয়া এই রায় বা রুলিংয়ে ইসরায়েলকে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হতে পারে অথবা মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের পথকে সুগম করতে বলা হতে পারে।
তবে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত গাজায় ইসরায়েল সত্যিকার অর্থে গণহত্যা চালাচ্ছে কি না, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো পূর্ণাঙ্গ রায় আজকে দেবে না। এই ধাপে আদালত গাজায় গণহত্যার বৃহত্তর অভিযোগ বিবেচনায় নিয়ে জরুরি আদেশ জারি করবে। পূর্ণাঙ্গ রায় দেওয়ার এটি একটি প্রক্রিয়া যা কয়েক বছর সময় নেবে।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে এই মামলাটি করে দক্ষিণ আফ্রিকা যাতে অভিযোগ করা হয় ইসরায়েল ১৯৪৮ সালে প্রণীত জাতিসংঘ গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ ও হলোকাস্টের পর এই কনভেনশন প্রতিষ্ঠিত হয়।
এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ অস্ট্রেলিয়ার আইন বিশেষজ্ঞ জুলিয়েট ম্যাকলিনটায়ার বলেন, ‘ইসরায়েল যে গণহত্যা চালাচ্ছে, সেটা প্রমাণ করার কোনো প্রয়োজন দক্ষিণ আফ্রিকার নেই। তাদের শুধু এটাই প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, সেখানে গণহত্যার সম্ভাব্য ঝুঁকি রয়েছে।
এ মাসের শুরু দিকে দুদিনের শুনানিতে দি হেগের পিস প্যালেসের হলরুমে ইসরায়েল ও গাজার সহিংসতা থেকে অনেক দূরে থাকা আইনজীবীরা গণহত্যা কনভেনশনের খুঁটিনাটি ও কারিগরি বিষয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় দক্ষিণ আফ্রিকার শীর্ষ আইনজীবী আদিলা হাশিম তার বক্তব্যে বলেন, ‘গণহত্যাকে আগে থেকে ঘোষণা করা যায় না। কিন্তু এই আদালতে গত ১৩ সপ্তাহের সাক্ষ্যপ্রমাণ দেখা যাচ্ছে, অসংলগ্ন ধারায় এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে গণহত্যার মতো তৎপরতা চালানোর দাবিকে যুক্তিসঙ্গতভাবে ন্যায্যতা দেয়।
এই মামলার পর ইসরায়েল উন্মত্ত হয়ে ওঠে এবং দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেন, ‘পৃথিবী উল্টে গেছে।’
গত ডিসেম্বরে আইসিজেতে মামলাটি করে দক্ষিণ আফ্রিকা। বিষয়টি চলতি মাসের শুরুর দিকে আইসিজেতে দুই দিনের শুনানি হয়। শুনানিতে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়, আদালত যেন জরুরি ভিত্তিতে ইসরায়েলকে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের নির্দেশ দেন। জেনোসাইড কনভেনশনের আওতায় ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক আদালতের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ ঘোষণা করা জরুরি বলেও তারা উল্লেখ করেন।