দেশ-বিদেশ নিউজ ডেস্ক : ইসরায়েল-অধিকৃত গোলান মালভূমিতে একটি ফুটবল মাঠে রকেট হামলায় শিশুসহ ১২ জন নিহত হয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৩ জন। শনিবার (২৭ জুলাই) মাজদাল শামসের দ্রুজ গ্রামের ফুটবল মাঠে এ হামলার জন্য লেবাননের হিজবুল্লাহকে দায়ী করেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এর জন্য ইরান-সমর্থিত লেবানিজ গোষ্ঠীকে চরম মূল্য দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেল আবিব। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, নিহতদের মধ্যে একাধিক শিশু রয়েছে। আর এই হামলা হিজবুল্লাহই চালিয়েছে। আমাদের কাছে থাকা তথ্যে কোনো ভুল নেই। আমরা কোনোভাবেই চুপ থাকবো না ও হিজবুল্লাহকে এর কঠোর জবাব দেবো।
এদিকে ইসরায়েল এই দায় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা অস্বীকার করেছে হিজবুল্লাহ। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, মাজদাল শামসে করা হামলায় শত্রুপক্ষের কিছু সংবাদমাধ্যম আমাদেরকে অভিযুক্ত করছে। আমরা পরিষ্কারভাবে এই অভিযোগ প্রত্যাখান করছি। এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের সশস্ত্র শাখা ইসলামিক রেজিস্ট্যান্সের কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরার ফ্লাইট এগিয়ে এনেছেন। দ্রুজ সম্প্রদায়ের নেতার এক ফোনকলে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ ঘটনার জন্য হিজবুল্লাহকে চরম মূল্য দিতে হবে, যা তারা কল্পনাও করছে না। তেল আবিবে ফিরে আসার পর নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠক আহ্বান করবেন নেতানিয়াহু।
হিজবুল্লাহ এর আগে গোলান মালভূমির ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হেরমন ব্রিগেড সামরিক দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল, খেলার মাঠ থেকে যার দূরত্ব মাত্র দুই কিলোমিটার। ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে সিরিয়ার কাছ থেকে দ্রুজ গ্রামের এই অংশের দখল নিয়েছিল ইসরায়েল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দক্ষিণ লেবাননের চেবা গ্রামের উত্তরে অবস্থিত একটি এলাকা থেকে রকেট হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ফরেনসিক পরীক্ষায় দেখা গেছে রকেটটি ইরানের তৈরি ফালাক-১। হিজবুল্লাহ এর আগে শনিবার ইসরায়েলের হেরমন ব্রিগেড সামরিক দপ্তরে ফালাক-১ রকেট দিয়ে হামলা চালানোর কথা জানিয়েছিল।
নেতানিয়াহুর উগ্র ডানপন্থি জোটের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ হিজবুল্লাহর নেতা সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহর বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এক্স-এ একটি পোস্টে স্মোট্রিচ লিখেছেন, ‘শিশুদের মৃত্যুর জন্য নাসরাল্লাহকে তার মাথা দিয়ে মূল্য দিতে হবে। পুরো লেবাননের মূল্য দিতে হবে।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে বর্বর আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। টানা ৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা আর এই আগ্রাসনের শুরু থেকেই হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। মূলত গাজায় যুদ্ধের জেরে লেবাননের দক্ষিণ সীমান্ত জুড়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাথে গুলি বিনিময় করছে হিজবুল্লাহ।